প্রতিনিধি, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) জামাল আহমেদ : বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ভৈরবে নির্মাণ হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের নৌবন্দর। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় ভৈরব নদী বন্দর পরিদর্শন করেন নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে তিনি বলেন, এ নৌ বন্দরটি দেশের সব থেকে পুরনো ও গুরুত্বপূর্ণ একটি নৌ বন্দর। এ বন্দরটি আন্তর্জাতিক নৌ বন্দর করার লক্ষ্যে উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে। ৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্ব ব্যাাংকের অর্থায়নে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিআইডব্লিউটি কাজটি শুরু করবে এবং ২০২৫ এর ডিসেম্বরের মধ্যে এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বন্দর নির্মাণ করা হলে নদী ভাঙ্গন রোধ হবে এবং নদী রক্ষা করা সম্ভব বলে জানান তিনি। এছাড়াও কর্ম সংস্থানের সুযোগ তৈরী হবে। প্রকল্পটি বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে হচ্ছে। প্রকল্পের কাজে নিয়োজিতদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
প্রকল্পের মাধ্যমে লঞ্চ, স্পীড বোড ও মালামাল লোড-আনলোডের জন্য ৩ টি জেটি করা হবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিআইডবিøউ’র কমোডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, প্রকল্প পরিচালক আইয়ুব আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শবনম শারমিন প্রমুখ।
জানাযায়, এই প্রকল্পের আওতায় ভৈরব নদী বন্দরসহ ১৩টি লঞ্চঘাটের উন্নয়ন করা হবে। উন্নয়ন কাজের জন্য সরকারিভাবে জমি অধিগ্রহণ এবং ক্ষতিগ্রস্থদের সরকারিভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
এ সরকারী প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে কারো সম্পদ বা জীবিকার ক্ষতি হলে তাদেরও পুনর্বাসন করা হবে। পুনর্বাসনের ফলে ক্ষতিগ্রস্থদের জীবিকা, মানবাধিকার সুরক্ষা এবং প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। দীর্ঘমেয়াদে প্রকল্পের সাফল্য, স্থায়িত্ব ও এলাকাবাসীর উন্নয়নের ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
প্রকল্পের জন্য বৈধ কৃষিজমি, বসতভিটা, পুকুর অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে বর্তমান স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন-২০১৭ অনুযায়ী সরকারী নগদ ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। পাশাপাশি শস্য, ফলজ ও কাষ্ঠল বৃক্ষ, ফল ও মাছের ক্ষতি হলে স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন-২০১৭ অনুযায়ী নগদ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
বৈধ বসতভিটা অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ভাড়াটিয়া থেকে থাকলে তাদের ভাড়ার ক্ষতিপূরণ এবং আবাসিক ও বাণিজ্যিক কাঠামো ক্ষতিগ্রস্থের ক্ষেত্রেও স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুমদখল আইন-২০১৭ অনুযায়ী নগদ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি নতুন কাঠামো নির্মাণ ও স্থানান্তরের জন্যও ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
এছাড়াও দুস্থ, মহিলা, বয়োবৃদ্ধ, ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান ও তার কর্মচারী, হকার এবং অন্যান্য বসতি স্থাপনকারীদের জন্য বিশ্বব্যাংকের পুনর্বাসন নীতি কাঠামো এবং পরিবেশ ব্যবস্থাপনা কাঠামো অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
এদিকে প্রকল্প সম্পর্কিত যে কোনো সমস্যা কিংবা অভিযোগ স্থানীয় এলাকাবাসী প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারবে। তাদের অভিযোগ দ্রæত সময়ে ও কার্যকর উপায়ে নিষ্পত্তির জন্য প্রকল্প কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত আলাদা কমিটির মাধ্যমে তা নিশ্চিত করা হবে।
ভৈরব বন্দর নির্মাণ পরিদর্শন শেষে আশুগঞ্জে ভারতের নির্মাণাধিন বন্দর পরিদর্শনে যান নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।