বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন

ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্তপ্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ক্যাব

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১৩ Time View

স্টাফ রিপোর্টার : মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এর পরামর্শে মুঠোফোন-ইন্টারনেট, ওষুধ, এলপি গ্যাস, মিষ্টি, বিস্কুট, আচার, টমেটো সস, ফলের রস, সব ধরনের তাজা ফল, সাবান ও ডিটারজেন্ট, কিচেন টাওয়েল, টয়লেট টিস্যু, মোবাইল সেবা ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট, ম্যাট্রেস, ফেরো ম্যাঙ্গানিজ (রড তৈরির কাঁচামাল), বার্নিশ ইত্যাদিসহ শতাধিক পণ্য ও সেবার ভ্যাট-সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে অধ্যাদেশ জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সীমিত ও প্রান্তিক আয়ের মানুষের এমনিতেই নিত্যপণ্যের ক্রমাগত দাম বুদ্ধি নিয়ে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি, সেখানে এই ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা আরেক দফা তাদের পণ্য ও সেবার ম‚ল্য বাড়িয়ে তাদের জীবনে নতুন করে আবারো অস্থিরতা তৈরি করবে। তাই এই অধ্যাদেশ বাতিল অথবা আগামী রমজান পর্যন্ত এই অধ্যাদেশ কার্যকর না করার দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), কিশোরগঞ্জ জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
গতকাল রবিবার এক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব, কিশোরগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি আলম সারোয়ার টিটু, কার্যকরী সভাপতি এডভোকেট মায়া ভৌমিক, সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসাইন রনি ও যুগ্ম সম্পাদক সাদেক আহমেদ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বৈশি^ক ও দেশীয় নানা পট পরিবর্তনের কারণে ২০২৪ সাল পুরো বছর জুড়ে খাদ্য ম‚ল্যস্ফীতি উর্ধ্বমূখী ছিলো। সর্বশেষ ডিসেম্বরে ১৩ শতাংশের কাছাকাছি এবং তার আগের মাসে ছিল ১৪ শতাংশের কাছাকাছি। ক্রমাগত নিত্য খাদ্যপণ্য ও খাদ্য বহির্ভূত পণ্য ও সেবার ম‚ল্য প্রতিযোগিতা হারে বাড়ছে। ফলে নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারও ক্রমাগত ম‚ল্যবৃদ্ধির চাপে জীবন-জীবিকা নির্বাহে প্রায় দিশাহারা। আর এর মধ্যেই এই ভ্যাট-সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ম‚ল্যস্ফীতিকে আরেক দফা উসকে দিতে পারে।
নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আগামী মার্চে পবিত্র মাহে রমজান মাস। রমজান উপলক্ষ্যে এখন থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বিশেষ করে তেল, ডাল, চিনি, ছোলা, মাছ, মাংস, মসলা অনেক পণ্যেরই দাম বাড়ানো ও মুজত করা শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। শীতের ভরা মৌসুমে শীতকালীন সবজির দাম কিছুটা কম থাকলেও ক্রমাগতভাবেই বাড়ছে চালের দাম। প্রকারভেদে চাল কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। এই সময়ে এভাবে ভ্যাট-সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করায় অসাধু ব্যবসায়ীরা এই সুযোগে আরেক দফা দাম বাড়ানোর সুযোগ নিয়ে নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন ছড়াতে পারেন। এভাবে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির হলে রমজান মাসে প্রান্তিক ও সীমিত আয়ের মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠবে। এমনকি রোজাদাররা সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে ফল রাখতে পারবে না।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, মূল্যম্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের নানাবিধ উদ্যোগ চলমান থাকলেও তার সুফল জনগণ পাচ্ছে না। সরকার ইতিপ‚র্বে ২৯টি পণ্যের ভ্যাট ও আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করলেও ভোক্তা পর্যায়ে তার কোন প্রতিফলন আসেনি। এই শুল্ক প্রত্যাহারের পুরো সুবিধাটুকু বড় বড় করর্পোরেট গ্রæপ ও আমদানিকারকরা হাতিয়ে নেন। সেখানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও সরকারের অন্য কোন দপ্তর খবরও রাখেনি। ম‚ল্যস্ফীতি ক্রমাগতভাবে ঊর্ধ্বম‚খী থাকায় মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। প্রতি মাসে মানুষের ধার দেনা ও খাবারের তালিকা কাটছাঁট করে কোনোরকমে সংসার চালাতে হচ্ছে।
যেহেতু আয় বা বেতন তো বাড়েনি, সেকারণে পরিবারের পুষ্টিসহ অনেক প্রয়োজন কাটছাঁট করতে পারলেও পরিবারের চিকিৎসা খরচ উপেক্ষা করা যাচ্ছে না। আবার জীবনরক্ষাকারী ওষুধ কিনতে প্রতি মাসেই বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। ওষুধের দামও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এবার সেই ওষুধের ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর ফলে আরেক দফা ম‚ল্যবৃদ্ধি ঘটবে। যা নতুন বছরে সাধারণ মানুষের জন্য ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা।’
তাই সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য বিদ্যমান ভ্যাট নেটের আওতা বাড়ানো, সহজীকরণ করা, কর ফাঁকি বন্ধ করা, এনবিআরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট-দুর্ভোগ বিবেচনা করা প্রয়োজন। একই সাথে পরোক্ষ কর বৃদ্ধি করে নিম্ন আয়ের মানুষের দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাওয়া রোধে প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোর ওপর জোর দেয়া দরকার। কর প্রশাসনে সংস্কার ও কর ফাঁকির বিষয়টি বন্ধ করে অবিলম্বে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানান ক্যাব নেতৃবৃন্দ।

আপডেট সংবাদ পেতে শতাব্দীর কন্ঠ পড়ুন, শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
All rights reserved © Shatabdir Kantha . Developed by SDTT Academy & Tech Liberty