এফএনএস : গত বছরের মে মাসে মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতে স¤প্রদায় এবং কুকি-জো উপজাতিদের মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়। তারই জের ধরে থেমে থেমে চলছে উত্তেজনা-সংঘর্ষ। দীর্ঘদিনের চলমান সহিংসতায় এবারই প্রথমবারের মতো ড্রোন ও রকেট ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়েছে। রাজ্যের চলমান সংঘাতে সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার দিয়ে টহল দেওয়া হচ্ছে। এবার পরিস্থিতি সামাল দিতে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ঘোষণা করেছে মণিপুর রাজ্য সরকার।
ছবি, ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচারের মাধ্যম হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে সহিংসতাকে আরও উস্কে দেওয়ার শঙ্কায় পাঁচদিনের জন্য ইন্টারনেট পরিসেবা বন্ধ করা হয়েছে। রাজ্য সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মণিপুর রাজ্যের আঞ্চলিক এখতিয়ারে লিজ লাইন, ভিসেট, ব্রডব্যান্ড এবং ভিপিএন পরিষেবাসহ ইন্টারনেট এবং মোবাইল ডাটার ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা/স্থগিতাদেশ দেওয়া হলো।
এই আদেশ স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয়ে আগামী রোববার বিকাল ৩টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। সরকার বলছে, দেশবিরোধী ও অসামাজিক কার্যক্রমের নকশা ও তৎপরতাকে নস্যাৎ করতে এবং শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রাখতে এবং সরকারি/বেসরকারি সম্পত্তির কোনো প্রকার ক্ষয়ক্ষতি রোধ করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
তাই, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার ইত্যাদির মতো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভুল তথ্য এবং মিথ্যা গুজব ছড়ানো বন্ধ করতে জনস্বার্থে ইন্টারনেট বন্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত সপ্তাহে ফের শুরু হওয়া সংঘর্ষে এ পর্যন্ত অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। বিদ্রোহীরা রাজ্যের কিছু অংশ অবরোধ করে রেখেছে। তারা গত সপ্তাহের ড্রোন হামলার জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছেন।
তিন জেলায় কারফিউ
মণিপুরে নতুন করে সহিংসতার মধ্যে ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব এবং থৌবল জেলায় গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে সর্বাত্মক কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। রাজ্যের শান্তি পুনরুদ্ধারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের এক দিন পরই মণিপুরের এই তিন জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। আদেশ অনুযায়ী, স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ (পিএইচইডি), পৌর কর্মকর্তা/কর্মচারী, বিদ্যুৎ, পেট্রোল পাম্প, আদালতের কার্যক্রম, বিমানযাত্রী এবং গণমাধ্যমকর্মীরা কারফিউর আওতা মুক্ত থাকবেন।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থতার অভিযোগে পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিজিপি) এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার পরিকল্পনা নিলে ইম্ফলের দুই জেলায় এ আদেশ আসে। একইভাবে থৌবালে সোমবার শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সহিংসতা রূপ নিলে সেখানেও কারফিউ ঘোষণা করা হয়। সূত্র: এনডিটিভি