প্রতিনিধি ঈশ্বরগঞ্জ : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া মিরপুরের মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড এন্ড ওল্ড এজ কেয়ার থেকে উদ্ধার করা সেলিমের কিডনি দুটি সচল রয়েছে। তার পেট কাটার কোন আলামত নেই। তিনি এখন অপুষ্টি ও রক্তস্বল্পতায় ভোগছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ও কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সৈয়দ হাসানুল হক আকাশ ও রাজধানী ক্লিনিক এন্ড হাসপাতালের ডাক্তার শহীদুল্লাহ (রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং)। চিকিৎসকগণ সেলিমকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়ার জন্য স্বজনদের পরামর্শ দিয়েছেন।
জানা যায়, গত ছয় মাস পূর্বে মানসিক ভারসাম্যহীন সেলিম বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পায়নি। পরে মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারের বিষয়টি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পরে সেলিমের পরিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিল্টন সমাদ্দারের কেয়ারে সেলিমের ছবি দেখতে পায়। তারপর গত মঙ্গলবার সেলিমের মা রাবিয়া, চাচাতো ভাই গ্রাম পুলিশ আব্দুর রশিদ সেলিমের সন্ধানে ঢাকা মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রমে গিয়ে তাকে শনাক্ত করেন। পরে সেলিমকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সেখান থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
পরিবারের লোকজন সেলিমকে বাড়িতে আনার পর পেটে ক্ষত চিহ্ন দেখে কোন পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই অস্ত্রোপচার করে তার কিডনি নিয়ে গেছে বলে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে আশংকা প্রকাশ করেন। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করে। পরে গত ১১ মে সেলিমের স্বজনরা প্রথমে ময়মনসিংহ নগরীর প্রতিষ্ঠিত রাজধানী ক্লিনিক এন্ড প্রাইভেট হাসপাতাল ও পরে প্রান্ত স্পেশালাইজড হাসপাতালে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ডাক্তারি রিপোর্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হন যে, সেলিমের দুটি কিডনি অক্ষত রয়েছে এবং পেটে কোন কাটা বা সেলাইয়ের কোন আলামত নেই।
সেলিমের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন বলেন- ডাক্তারি রিপোর্ট সরবরাহের পর চিকিৎসকগণ জানিয়েছেন সেলিম চরম অপুষ্টি ও রক্ত শূন্যতায় ভুগছে। তাকে দ্রæত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া প্রয়োজন। পরে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রোববার সেলিমকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে স্বজনদের সাথে মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
চিকিৎসকগণ জানিয়েছে, সেলিম মানসিক ভারসাম্যহীন একজন মানুষ। তাকে শিকল ও বেল্ট দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। সে কারণে হয়তো পেটে দাগ হতে পারে। যে জায়গায় দাগটি হয়েছে সাধারণত সে জায়গায় কিডনি অপারেশন হয়ে থাকে। এতে স্বজনদের সন্দেহের সৃষ্টি হয়। তার পেটে অস্ত্রোপচারের কোন আলামত নেই। কিডনিও সচল রয়েছে।