স্টাফ রিপোর্টার : ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে টস জিতে যখন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের হাতে ব্যাট তোলে দেয়, তখন নিশ্চিই পাকিস্তানি তো বটেই সাধারণ ক্রিকেট প্রেমিরাও রানের বন্যা দেখায় বুদ হয়ে ছিলেন। কিন্তু নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে পাকিস্তান ৭ উইকেট হারিয়ে যে রান সংগ্রহ করলো তা মুটেও টি-টোয়েন্টি সুলভ নয়। তারপরও বোলিং দিয়ে হয়তো পাকিস্তান ম্যাচ বের করে নিতে পারবে এমনটাই ভাবছিল পাক ক্রিকেট ভক্তরা।
কিন্তু ব্যাট করতে নেমে মোনাক প্যাটেলের দল যা করলো তা রীতিমতো বিস্ময়কর। পাকিস্তানি বোলিং আক্রমণকে সামলে ম্যাচকে নিয়ে গেল উত্তেজনার শীর্ষে। যুক্তরাষ্ট্রের নিতীশ কুমার যখন ইনিংসের শেষ বলটি মোকাবেলা করবেন তখন সমিকরণ ছিল- ছক্কা হলে জয়, চার হলে টাই, আর এর কম হলে হার। আসাদ রউফের বলে নিতীশ নিলেন চার, ম্যাচ গড়ালো সুপার ওভারে।
সুপার ওভারে ব্যাটিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভরসা অ্যারন জোনস ও হারমিত সিং। জোনসের জন্ম নিউইয়র্কে। মা-বাবা বার্বাডোজের হওয়ায় সেখানেই কেটেছে বড় একটা সময়। তাই শাই হোপ-জেসন হোল্ডারদের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা আছে জোন্সের। মূলত জোনসের একটি সেঞ্চুরিই যুক্তরাষ্ট্রকে ওয়ানডে মর্যাদা এনে দিয়েছিল। কিছু দিন পূর্বে কানাডার বিপক্ষে জোন্সের ৯৪* রান যুক্তরাষ্ট্রকে উপহার দেয় স্মরণীয় এক জয়। হারমিতের জন্ম মুম্বাইয়ে, আর মেধায় শুরুতে ধরা দিয়েছিরেন শিবাজি পার্কে। খেলেছেন ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলে, তবে জাতীয় দল পর্যন্ত যাওয়ার স্বপ্নটা পূরণ হয়নি।
হারমিত আর জোনস মিলে মোহাম্মদ আমিরের সুপার ওভারে তুললেন ১৮ রান। এর মধ্যে ৭ রানই অতিরিক্ত। সুপার ওভারে ১৮ রানের সম্বল খুব একটা নিরাপদ নয়। তাই হয়তো পাঞ্জাবে জন্ম নেওয়া পেসার আলী খানের স্থলে ভারতে জন্ম নেয়া ও বেড়ে ওঠা সৌরভ নেত্রবালকারের হাতে বল তোলে দেন মোনাক প্যাটেল। তাই পাকিস্তান বধে ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলা সৌরভ নেত্রবালকার নিজেকে তাঁতিয়ে তোলেন। তার ওভার থেকে ইফতিখার, শাদাব আর ফখর জামান মিলে তোলেন মাত্র ১৩ রান। ফলে পাকিস্তানের বিপক্ষে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র ৫ রানের ঐতিহাসিক জয় পায়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : পাকিস্তান ১৫৯/৭ (২০), বাবর আজম ৪৪(৪৯), সাদাব খান ৪০(২৫), শাহিন আফ্রিদী ২৩*(১৬), কেনজিগে ৩/৩০, সৌরভ নেত্রবালকার ২/১৮, আলী খান১/৩০; যুক্তরাষ্ট্র ১৫৯/৩ (২০), মোনাক প্যাটেল ৫০(৩৮), অ্যারন জোনস ১১(১৬), অ্যান্ড্রিজ গউস ৩৫(৩৮), মোহাম্মদ আমির ১/২৫, নাঈম শাহ ১/২৬, হারিস রউফ ১/৩৭।
সুপার ওভার : যুক্তরাষ্ট্র ১৮/১, অ্যারন জোনস ১১(৫), আমির ০/১৮; পাকিস্তান ১৩/১, ইফতেখার আহমেদ ৪(৩), শাদাব খান ৩(৩)। ফলাফল : যুক্তরাষ্ট্র ৫ রানে জয়ী। প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ মোনাক প্যাটেল।