প্রতিনিধি, পাকুন্দিয়া : পাকুন্দিয়ায় আগাম জাতের শিম চাষ করেছেন ফয়সাল আহম্মেদ নামে এক কৃষক চন্ডিপাশা চরপাড়া এলাকার বাসিন্দা তিনি এই এলাকায় আলাউদ্দিন ছেলে তিনি গ্রীষ্মকালীন শিমের চাষ করেন। শিম শীতকালীন সবজি হলেও অফ সিজনে এর চাষাবাদ করে তিনি বেশ সফলতা পেয়েছেন। এই সময়ে বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় শীত মৌসুমের চেয়ে চার থেকে পাঁচগুণ বেশি লাভ পাচ্ছেন।
লাভজনক হওয়ায় দিন দিন এ উপজেলায় গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ বাড়ছে বলে কৃষি বিভাগ স‚ত্রে জানা গেছে, কৃষক ফয়সাল আহম্মেদ উপজেলার চন্ডিপাশা ব্লকে এক বিঘা জমিতে শিম গাছে ফুল ও ফলে ভরে গেছে। তিনি উপজেলা কৃষি বিভাগের সহায়তায় গত মে মাসে জমিতে আগাম জাতের শিমের বীজ রোপণ করেন। রোপণের দুই মাস পর গাছে ফল আসতে শুরু করে। ফলন আসার ১৪ হতে ২১ দিন পর গাছ থেকে শিম উত্তোলন করা শুরু করেন।
চারা রোপণ, সেচ দেওয়া, সার প্রয়োগ, আগাছা দমন, কীটনাশক ও মাচা তৈরিসহ তার মোট ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমান বাজারে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা দরে শিম পাইকারি বিক্রি করছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি বিভাগ স‚ত্রে জানা গেছে, এই উপজেলার মাটি আগাম সবজি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এজন্য আগাম জাত এবং লাভজনক ফসল উৎপাদনে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। এর মধ্যে আগাম শিম চাষে আশার আলো দেখছেন কৃষকরা। এ বছর উপজেলায় চার হেক্টর জমিতে আগাম শিম চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ।
উপজেলার এগারসিন্দুর এবং চন্ডিপাশা ইউনিয়নে এবছর তিন হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ করা হয়েছে। এরইমধ্যে কৃষকেরা এ জাতের শিম বিক্রি করে আর্থিকভাবে বেশ মুনাফা পাচ্ছেন। তাদের সফলতা দেখে অন্যরাও আগাম জাতের শিম চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কৃষক ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, এক বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছি। সপ্তাহ দু’য়েক ধরে শিম উঠানো শুরু করেছি। সপ্তাহে দুইদিন বাগান থেকে দেড় থেকে দুই মণ করে শিম তুলতে পারছি। সময় গেলে ফলন আরো বাড়বে। বাজারে শিমের ভালো দাম পাচ্ছি।
সব খরচ বাদ দিয়ে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার মতো লাভ করতে পারবো বলে আশা করছি। তিনি আরো বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমাকে অটো জাতের এই শিম বীজ দিয়েছিল। এই শিমের নাকি ফলন অন্য শিমের চেয়ে বেশি হয়। তাই এই জাতের শিমের চাষ করেছি এবং অনেক লাভবান হয়েছি। কৃষি অফিস থেকে তারা প্রতিনিয়ত খোঁজ নিচ্ছেন।
চন্ডিপাশা ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো.জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় কৃষক ফয়সাল আহম্মেদের এক বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। এতে তিনি ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। প্রচুর ফলন এসেছে। বাজার দর ভালো থাকায় তিনি বেশ লাভবান হবেন। এছাড়াও এই ব্লকে ১৫-২০বিঘা জমিতে এবছর গ্রীষ্মকালীন অটো জাতের শিমের আবাদ হয়েছে।
শীত মৌসুমের চেয়ে এই মৌসুমে কৃষকেরা শিম চাষ করে চার থেকে পাঁচগুণ বেশি লাভবান হচ্ছেন।
পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুর-ই-আলম বলেন, শিম শীতকালীন সবজি হলেও বর্তমানে আগাম জাতের শিম চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। বাজারে আগাম শিমের দামও বেশ চড়া। তাই কৃষকরা দিন দিন এই আগাম জাতের শিম চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। আমরা কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করছি। এই শিম মে-জুন মাসে রোপণ করা হয়। রোপণের দুই মাস পর গাছে শিম ধরতে শুরু করে। এ বছর উপজেলার চার হেক্টর জমিতে আগাম শিম চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় গত বছরের চেয়ে এ বছর শিমের ভালো ফলন আশা কর হচ্ছে ।