স্টাফ রিপোর্টার : কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের চৌদ্দশত ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে বেসরকারিভাবে পরিচালিত সবুজ সাথী শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বিক্রির পায়তারা চলছে। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সুলতানপুর গ্রামের পিতুষ সরকারের ছেলে দেব দুলাল নিজেই বিদ্যালয় বিক্রির যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়ানোর মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১৮ সালে দেব দুলাল নিজের ৩১ শতাংশ জমির উপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের উন্নয়নে সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে।
এলাকার অনেক শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে একটি পূর্নাঙ্গ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিদ্যালয়টিকে গড়ে তোলেন। বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষকের নিবিড় তত্ত¡াবধানে বিপুল সংখ্যক কচিমনা ছাত্র-ছাত্রীরা লেখাপড়া করছে।
কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়কের পাশেই গড়ে উঠেছে সবুজ সাথী শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। বিন্নাটি মোড় থেকে একটু দক্ষিণ দিকে যেতেই রাস্তা থেকে পূর্ব পাশে দেখা যায় সু-দৃশ্যমান বিদ্যালয়টি। নিরিবিলি পরিবেশ ও ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার জন্য স্কুলে রয়েছে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ। শিক্ষার্থীদের জন্য সামনে খেলার মাঠ ও টয়লেটসহ যাবতীয় সুবিধা বিদ্যমান।
সম্প্রতি জমির মালিক দেব দুলাল অর্থের মোহে পড়ে বিদ্যালয়ের সম্পত্তিসহ স্থাবর-অস্থাবর যাবতীয় জিনিসপত্র ৭৮ লক্ষ টাকা দাম সাব্যস্ত করে বিক্রি করার পায়তারা করছেন। আর এতে করে বিদ্যালয়ে অধ্যায়ণরত ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যত শিক্ষা জীবন আশঙ্কার মধ্যে পড়েছে। শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে নতুন প্রজন্মের এসব শিশুদের।
স্থানীয় লোকজন জানান, বিদ্যালয়ে অধ্যায়ণরত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা মহা-বিপাকে পড়ছেন তাদের সন্তানদের নিয়ে। বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় শিক্ষার্থীদের মধ্যেও চরম হতাশা আর উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।
এদিকে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির জন্মলগ্ন থেকেই একাধিকবার মাঠ ভরাট ও টয়লেটসহ বিভিন্ন অবকাঠামে উন্নয়নে টিআর ও কাবিখা প্রকল্প দিয়ে সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, শিশুদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত জীবন নিয়ে কোন রকম তামাশা করা কোন অধিকার কারো নেই। মূখোশধারী ও অর্থলোভী দেব দুলালের নিজ ইচ্ছায় বিদ্যালয় বিক্রির পায়তারার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।
তারা আরো জানান, সরকারী অনুদান ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত সুদৃশ্য সবুজ সাথী শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। আর দেব দুলাল সে এই সুযোগ কাজে লাগাতে চায়। বিপুল পরিমাণ টাকায় বিদ্যালয়টি বিক্রি করে দিয়ে স্থানীয় শিশুদেরকে শিক্ষা বঞ্চিত করার মতো সর্বনাস ডেকে আনছে। বিদ্যালয় বিক্রির পায়তারা বন্ধকরনসহ এমন ঘটনায় তারা কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের জোর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।