এফএনএস : ভারতের ফারাক্কা ব্যারাজের ১০৯টি গেট খুলে দেওয়ার পর চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ভেড়ামারা-কুষ্টিয়ার সাধারণ মানুষের মাঝে। অনেকেই নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার কথা ভাবছে। আবার অনেকেই বন্যার প্রস্তুতি হিসাবে খাদ্য সামগ্রী উঁচু স্থানে মজুত করার কাজ শুরু করেছে। আতঙ্কিত মানুষ মনে করছে, ভারতের ত্রিপুরার ডম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ার পর ফেনী জেলার মানুষের যে অবস্থা হয়েছে, ফারাক্কার বাঁধ খুলে দেওয়ার পর হয়তো ভেড়ামারা-কুষ্টিয়াতেও একই অবস্থা সৃষ্টি হবে। এ ক্ষেত্রে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং পাবনা হাইড্রোলজি বিভাগ বারবার নিশ্চিত করেছে, আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য।
হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে পানি পরিমাপক প্রতিষ্টান পাবনা হাইড্রোলজি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টা পর্যন্ত সর্বশেষ হার্ডিঞ্জ ব্রীজের পানির লেবেল মাপা হয়েছে ১১ পয়েন্ট ৯৮। যা গত ৪৮ ঘন্টা ধরে একই অবস্থায় স্থীর আছে। পানির উচ্চতা বাড়েও নি, কমেও নি। বর্তমানে বিপদসীমার ১৮২ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিপদসীমা ধরা হয় ১৩ পয়েন্ট ৮০ সেন্টিমিটার। তবে আগামীকাল (২৯ অগাষ্ট) পানি বৃদ্ধির আভাস পাওয়া যেতে পারে। জানা গেছে, প্রতিদিন ৬ বার হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা মাপা হয়। এর আগে গত সোমবার দুপুর ১২টায় পানির উচ্চতা ছিল ১১ পয়েন্ট ৯৮ সেন্টিমিটার। সন্ধ্যা ছয়টাতেও একই উচ্চতা ছিল।
পাবনা হাইড্রোলজি বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইলিয়াস হোসেন জানিয়েছেন, ভারতের ফারাক্কা থেকে হাডিঞ্জ ব্রীজের দূরত্ব ১৬০ কিলোমিটার। হিসাব অনুযায়ী, আগামীকাল (২৯ অগাষ্ট) ফারাক্কার পানি ছাড়ার প্রভাব বোঝা যেতে পারে। কারন, পানি ছাড়ার প্রভাব আগে পড়বে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায়। তারপর প্রবাহ বেশি হলে হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে আসবে। সূত্র জানিয়েছে, হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টের বিপদ সীমা ১৩ পয়েন্ট ৮০ তে পানির উচ্চতা পৌঁছালেও তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হবে না ভেড়ামারা-কুষ্টিয়ার।
শুধুমাত্র নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবে। এই পয়েন্টে ১৪ দশমিক ৩৩ পর্যন্ত সর্বোচ্চ পানির উচ্চতা রেকর্ড করার সুযোগ রয়েছে। তবে পানির উচ্চতা ১৬ সেন্টিমিটার অতিক্রম করলে ভয়াবহ বন্যা দেখা যেতে পারে। ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর গ্রামের ফাতেমা জেসমিন জানিয়েছেন, ফারাক্কার সব গুলো গেট খুলে দেওয়ার পর আমার ঢাকার এক আত্মীয়ফোন করে আামাকে জানান, ভারতের ত্রিপুরার ডম্বুর বাঁধ খুলে দিয়ে যেভাবে ফেনী সহ ১০টি জেলা ডুবিয়ে দিয়েছে। সেভাবেই রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ভেড়ামারা, পাবনা, কুষ্টিয়া অঞ্চলকেও ডুবিয়ে মারবে। দ্রæত সর্তকতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেন।
এরপর থেকে আমরা বন্যার প্রস্তুতি হিসাবে খাদ্য সামগ্রী উঁচু স্থানে মজুত করার কাজ শুরু করেছি। তিনি জানান, মানুষের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আকাশ কুমার কুন্ডু জানিয়েছেন, ফারাক্কার গেটগুলো খুলে দিলেও এতদাঞ্চলে তেমন প্রভাব পড়বে না আশা করি। তারপরও আমাদের আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্র গুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। নদী র্তীরবর্তী মানুুষ গুলোকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করার অনুরোধ করা হয়েছে।