উজ্জ্বল সরকার, হোসেনপুর :
গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে লালছে বর্ণের একধরণের সবজি। দেখতে হুবহু চেরি ফলের মতো। কিন্তু এগুলো চেরিফল নয়। চেরি জাতের একধরনের টমেটো। দেখতে সুন্দর, সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এ টমেটোর ফলনও হয়েছে দ্বিগুণ। কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে পলিনেট হাউজে এ জাতের টমেটো চাষ করে সফলতা পেয়েছেন এখলাস উদ্দিন সবুজ নামের এক যুবক।
জানা গেছে, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় পলিনেট হাউস প্রর্দশনী বাস্তবায়নে কাজ করছেন এ যুবক। এবার চেরি টমেটো চাষ করেছেন তিনি। দেখতে চেরি ফলের মতো হওয়ায় এ টমেটোর চাহিদা অনেক। বাজারে উচ্চ ম‚ল্য পাওয়া যায়।
চেরি টমেটো আকারে আঙুরের চেয়ে কিছুটা বড়। এই টমেটো কাঁচা অবস্থায় সবুজ থাকলেও পাকলে তা গাঢ় লাল ও কমলা রং ধারণ করে। সাধারণত ৯০ দিন পর ফলন পাওয়া যায়। এটি শীত প্রধান দেশের ফসল হলেও এ দেশের আবহাওয়াতেও ফলন হয়েছে আশানুরূপ। প্রতিটি গাছ থেকে সাত থেকে আট কেজি টমেটো ধারণা করছেন এই উদ্যোক্তা। অরগানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের ফলে এর উৎপাদন খরচ কিছুটা বেশি।
সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর হওয়ায় বাজারে এর চাহিদাও অনেক। বর্তমানে চেরি টমেটো স্থানীয় বাজারে কেজি প্রতি ১৫০-২০০ টাকা দরে বিক্রি করার ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এই টমেটো চাষে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। উৎপাদন বেশি এবং বাজারে চাহিদা থাকায় অনেক লাভবান হতে পারবেন বলে জানালেন তিনি।
এদিকে, চেরি টমেটোর চাষ পদ্ধতি ও ফলন দেখে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয়ঝে। প্রচুর ফলন হওয়ায় অন্য কৃষক ও বেকার যুবকরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন এই টমেটো চাষে। আর ফলন ভালো এবং বাজারে চাহিদা থাকায় সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে এ টমেটো নিয়ে।
স্থানীয় যুবক মোজাম্মেল জানান, পলিনেট হাউজে শিক্ষিত কৃষক সবুজের বিভিন্ন জাতের বিদেশী সবজি চাষ এলাকার অন্য যুবকদের কৃষিতে আগ্রহী করে তুলছে।
কৃষক এখলাস উদ্দিন সবুজ জানান, এর আগেও তিনি ক্যাপসিকাম চাষ করে সফলতা অর্জন করেছেন। এবার তিনি চেরি টমেটো চাষ করেছেন। তিনি আশাবাদী এসব উন্নত জাতের সবজি একসময় বিদেশে রপ্তানী দেশ বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করবে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মুদাসিল হায়দার আলমগীর বলেন, চেরি টমেটো দেখতে অনেকটা আঙুর ফলের মতো। এ উপজেলায় এ জাতের সবজি আগে তেমন চাষ হয়নি। কৃষক সবুজের এ চাষাবাদে সার্বক্ষণিক খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম শাহজাহান কবির বলেন, নতুন জাতের এই টমেটো চাষে স্থানীয় কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। এ টমেটো উচ্চ ফলনশীল ও উচ্চ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। কৃষি অফিস থেকে কৃষক সবুজকে সব ধরনের সহযোগিতাও করা হচ্ছে।