স্টাফ রিপোর্টার : কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে লোডশেডিংয়ের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের। এ ছাড়া লোডশেডিংয়ের প্রভাবে ইন্টারনেটের গতি কম থাকায় অনেক সময় ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতেও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে গ্রাহকদের। বিশেষ করে করে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। অনেক গ্রামে ২৪ ঘন্টায় এক ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না গ্রাহকেরা। ভুক্তভোগী উপজেলার শাহেদল গ্রামের লাদেন মিয়াসহ অনেকেই জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত-দিন মিলে দুই ঘন্টার বেশি বিদ্যুৎ পাননি তারা। বিদ্যুৎতের এমন ভেলকিবাজি উপজেলার অন্যান্য এলাকাতেও। এহেন পরিস্থিতিতে হোসেনপুরের সর্বত্রই লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। হোসেনপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিস স‚ত্রে জানা যায়, উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌর এলাকার জন্য ৫৫ হাজার গ্রাহকের বিপরীতে গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুতের মোট চাহিদা রয়েছে ১৫ মেগাওয়াট। সেখানে তারা চাহিদার এক তৃতীয়াংশ পাচ্ছেন। এর মধ্যে পৌর এলাকায় চাহিদা রয়েছে আড়াই থেকে পৌনে তিন মেগাওয়াট। তাই উপজেলার ৬টি ফিডার এক সাথে সচল রাখতে পারছে না বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট সাবষ্টেশন কর্তৃপক্ষ। তাই বাধ্য হয়েই অন্য সব ফিডারগুলোতে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। হোসেনপুর পৌর এলাকায় লোডশেডিংয়ের মাত্রা কিছুটা কম হলেও গ্রামাঞ্চলে অনেক বেশি হচ্ছে। উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের গড়মাছুয়া গ্রামের আব্দুস সালাম জানান, গত রমজান মাসে তাদের সেহেরি খেতে হয়েছে মোবাইল ফোনের আলো দিয়ে। বর্তমানে আরো ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। উপজেলার আড়াইবাড়িয়া ইউনিয়নের জামাইল গ্রামের শামীম আহমেদ জানান, লোডশেডিংয়ের কারণে ফ্রিজে রাখা মাছ মাংস সব নষ্ট হয়ে পড়েছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, মনে হয় আমরা ভিন্ন গ্রহের মানুষ। অথচ বিদ্যুৎ বিল ঠিকই দিতে হচ্ছে আগের মতোই। এ ব্যাপারে হোসেনপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতির জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) সোহেল রানা জানান, কয়েকদিন ধরে গরমের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ও সেচ মৌসুমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। ফলে লোডশেডিংয়ের তীব্রতাও বেড়েছে। আমাদের চাহিদা ১৫ মেগাওয়াট হলেও গ্রিড থেকে এখন ৫-৬ মেগাওয়াট পাচ্ছি। বরাদ্ধ বেশি পাওয়া গেলে হোসেনপুরে লোডশেডিং থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।