স্টাফ রিপোর্টার ঃ কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সেবা গ্রহীতাদের সেবার মান আরো উন্নয়নে কর্তৃপক্ষ নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। গতকাল থেকে এ নতুন নিয়মে সেবা গ্রহীতা পাসপোর্টধারী নারী-পুরুষ এমনকি শিশু বাচ্চা হলেও তারা স্ব-স্ব কাগজপত্র নিজ হাতে নিয়ে অফিসে প্রবেশ করে ফাইল অনুমোদন করে ফিঙ্গার দিয়ে বের হবেন। একজনের কাগজপত্র অন্য কেহ নিয়ে ভেতরে প্রবেশ একেবারেই নিষিদ্ধ। এক শ্রেণির বখাটে ও মাদকসেবীদের দৌরাত্মে সেবাগ্রহীতার চরম অতিষ্ট হয়ে পড়ছে। প্রতিনিয়ত হয়রানি এমনকি নানা প্রতিবন্ধকতা পোহাতে হচ্ছে সহজ সরল নিরীহ লোকজনের। কর্তৃপক্ষ তাদের এ দৌরাত্ম ও অপতৎপরতা রোধে সেবা গ্রহীতা ছাড়া বাড়তি কোন লোক গ্রহণ করবেনা বলে মেইন গেইটে দায়িত্বরত আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের কঠোর ভাবে দায়িত্ব পালনের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা বিপুল সংখ্যক নারী পুরুষ নতুন পাসপোর্ট করতে বা নবায়ন করতে অফিসে ঢুকতে না ঢুকতেই তাদের উপর এ চক্রের দৃষ্টি পড়ে। এসব লোকজনের হাতে থাকা পাসপোর্ট ফরম নিয়ে টানা হেছড়া করতে দেখা যায়। আবার কখনও তাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে এ চক্রটি দ্রæত পাসপোর্ট করে দেয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে ফরম নিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবী করে।
বর্তমানে পাসপোর্ট অফিসে এ চক্রের দৌরাত্ম চরম আকার ধারণ করায় কর্তৃপক্ষকে অনেক হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারা প্রায় সময়েই পাসপোর্ট অফিসে প্রবেশ করে পাসপোর্ট ফরম জমা দেয়ার কাউন্টারের সামনে অহেতুক ঝটলা বেঁেধ ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ফায়দা লুটতে চায়। তবে কেহ না জেনে এ চক্রের ফাঁদে পড়লে তার পাসপোর্ট করাতো দূরের কথা সম্পূর্ণ হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হয়।
পাসপোর্ট অফিসে কেবল মাত্র পাসপোর্টধারী ব্যক্তিই প্রবেশ করার কথা থাকলেও তারা অনেক সময় আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। তাদের এমন কর্মকান্ডে নিরীহ লোকজন অনেকটাই অসহায়ত্ব বোধ করে। ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এ চক্রের সদস্যরা পাসপোর্টধারী লোকজনের কাছ থেকে ফরমে সই স্বাক্ষরের কথা বলে টাকা নিয়ে অনেক সময় গাঁ ডাকা দেয়। কেহ ফিঙ্গার প্রিন্টের কথা বলে সাধারণ লোকজনের সাথে প্রতারণা করে। আবার তারা পাসপোর্ট বই তুলে দেয়ার কথা বলেও মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়।
তবে ভুক্তভোগী এসব লোকজনের দাবী পাসপোর্ট অফিসের সুষ্ঠ পরিবেশ বজায় রাখতে এ নতুন উদ্যোগ যথাযথ ভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। পাসপোর্ট অফিসের ভেতরে বখাটে ও এসব মাদক সেবীদের কঠোর হস্তে রুখতে হবে। তবেই কর্তৃপক্ষের সেবার মান আরো গতিশীল হবে। সেবা গ্রহীতা সাধারণ লোকজনের হয়রানি বন্ধ হবে।
এদিকে সচেতন ও সুশীল সমাজের লোকজন কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের চলমান এমন উদ্যোগ এর প্রতি দুষ্টের দমন বলে সহমত প্রকাশ করছেন। তারা আরো জানান, এসব বখাটেরদের দৌরাত্মা চিরতরে দমন করতে হবে। তবেই সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।
তবে পাসপোর্ট অফিস কর্তৃপক্ষ জানান, অফিসের মধ্যে এসব দালালদের প্রতিনিয়ত কড়া নজরদারী করা হয়। মাঝে মধ্যে অফিসের ভেতরে তাদের পাওয়া গেলে তাদের আটকিয়ে আমরা পুলিশ হেফাজতে দিয়ে দেই। সাধারণ মানুষের কাজে যেন কোন বিঘœ সৃষ্টি না হয়। কর্তৃপক্ষ আরো জানান, পাসপোর্টধারীর যথাযথ সেবা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বদাই সচেষ্ট।