স্টাফ রিপোর্টার : গণশিক্ষা ও প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চাকরি করে, আবার নিজেই একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে গলা টিপে ধ্বংস করতে চাওয়া কে এই দেব দুলাল? এমন গুঞ্জন চলছে সচেতন মহলে। কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের চৌদ্দশত ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের বেসরকারিভাবে পরিচালিত সবুজ সাথী শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বিক্রির পায়তারায় এলাবাসী ফুঁসে উঠছে।
জানা যায়, দেব দুলাল সুলতানপুর গ্রামের পিতুষ সরকারের ছেলে। সে গণশিক্ষা ও প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এমএলএসএস পদে চাকরি করেন। আর তিনিই কিনা একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে গলা টিপে মারার উদ্যোগ নিয়েছেন!
এ ঘটনায় সকল শ্রেণি পেশার লোকজনের বিবেকে বার বার একটি কথাই নাড়া দিচ্ছে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ স্থান শিক্ষ মন্ত্রনালয়। আর সেখানে চাকরি করে, কচিমনা শিশুদের ভবিষ্যত জীবন অন্ধকারে টেলে দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ৭৮ লক্ষ টাকায় বিক্রির পায়তারা করা তাকে কি মানায়? তার পেশাগত দায়িত্ববোধ নিয়ে এলাকাবাসীর মনে প্রশ্ন জেগেছে। এমনকি তার নীতি-নৈতিকতাও প্রশ্নবিদ্ধ। অর্থের মোহে পড়ে এমন হীন কাÐ দেখে স্থানীয় এলাকাবাসী সহ জেলা সদরের সাধারণ জনতা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
উল্লেখ্য, শিক্ষর আলো ছড়ানোর মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১৮ সালে দেব দুলাল নিজস্ব ৩১ শতাংশ জমির উপর সবুজ সাথী শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। বিদ্যালয়ে শিশুদের পাঠদান ও সার্বিক কার্যক্রম চলে আসছে যথারীতি। বিদ্যালয়ের উন্নয়নে সরকারী ভাবে অর্থ সাহায্য দেওয়া হয়েছে। এমনকি এলাকার অনেক শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে একটি পূর্নাঙ্গ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলেন।
বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষকের নিবিড় তত্ত¡াবধানে বিপুল সংখ্যক কচিমনা ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়া করছে। কিশোরগঞ্জ -ভৈরব মহাসড়কের পাশেই বিদ্যালয়ের অবস্থান। বিন্নাটি মোড় থেকে একটু দক্ষিণ দিকে যেতেই রাস্তা থেকে পূর্ব পাশে দেখা যায় সু-দৃশ্যমান বিদ্যালয়টি। নিরিবিলি পরিবেশ ও ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার জন্য স্কুলে রয়েছে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ। শিক্ষার্থীদের জন্য সামনে খেলার মাঠ ও টয়লেট সহ যাবতীয় সুবিধা বিদ্যমান।
হঠাৎ করে জমির মালিক দেব দুলাল কেন বিদ্যালয়ের স্থাবর-অস্থাবর যাবতীয় জিনিষপত্র ৭৮ লক্ষ টাকায় বিক্রির পায়তারা করছেন? প্রশ্ন জেগেছে তিনি কি অসৎ উদ্দেশ্যে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন? সরকারি অনুদান সহ নানা মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত সাহায্য কিংবা কোনো বড় ধরণের অনিয়মকে ঢাকতে এই ক’টকৌশলের পথে হেঁটেছেন?
জমি দানকারী একজন প্রতিষ্ঠাতা কি ইচ্ছে করলেই গণশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিক্রি করার অধিকার রাখেন? স্থানীয় প্রশাসন এবং গণশিক্ষা ও প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুদৃষ্টি কামান করছে সবুজ সাথী শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ ও স্থানীয় এলাকাবাসী। পাশাপাশি তদন্ত করে দেব দুলাল এবং বিদ্যালয়ের ব্যাপারে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন।