স্টাফ রিপোর্টার : শুল্ক ফাঁকি দিয়ে একটি চোরাই সিন্ডিকেট চক্রের দৌরাত্বে কিশোরগঞ্জের বড় বাজারে প্রতিনিয়িত ট্রাক ভর্তি ভারতীয় অবৈধ চিনিতে বাজার সয়লাব। বড় বাজারের কতক নামী-দামী ব্যবসায়ী ওই চোরাই সিন্ডিকেট চক্রের সাথে আতাত করে লোক চক্ষুর আড়ালে শেষ রাতে ট্রাক ভর্তি চিনি নিয়ে আসছে।
সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে দ্বিগুণ মুনাফা লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা কালো বাজারে রাতের আধাঁরে তাদের গোডাউনে রেখে এইসব চিনি বাজারজাত করছেন। প্রতিদিন ৪/৫টি চিনি ভর্তি ট্রাক বড় বাজার শামছু মিয়ার মসজিদের সামনের রাস্তায় সারিবদ্ধ ভাবে দাড়িয়ে ফজরের আজানের আগেই মাল খালাস করে চলে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চিনি পাচারচক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে চোরাই পথে নিম্ন মানের অপরোশোধিত কম দামে ভারতীয় চিনি এনে কিশোরগঞ্জের বড়বাজার সহ জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে। চোরাচালানের মাধ্যমে তারা শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার পাশাপাশি একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। চোরাই সিন্ডিকেট চক্রটি ভারত থেকে চোরাই পথে কম দামে চিনি এনে দেশীয় কোম্পানীর চিনির বস্তায় ভর্তি করে। পরে তা দেশীয় কোম্পানীর চিনি হিসেবে বেশী দামে বিক্রি করে। চোরাই চক্রটি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধুবাউড়া ও দূর্গাপুর দিয়ে অবৈধ ভাবে পাচার করা চিনি নিয়ে আসে।
নির্ভর যোগ্য সূত্রে জানা যায়, সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সুনামগঞ্জের দুই উপজেলার সীমান্ত দিয়ে আসছে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার অবৈধ ভারতীয় চিনি। আর সেই চিনি প্রতিদিন রাত ১২ টার পর সুনামগঞ্জের পৌর শহর দিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এতে প্রতিনিয়ত সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে তেমনি এই সব এলাকায় দিন দিন বাড়ছে চোরাচালানীদের দৌরাত্ব্য। সূত্রে আরো জানা যায়, হাওরের জেলা সুনামগঞ্জ। এই জেলায় বৈঠাখালী এলাকার সুরমা নদীর উপর আব্দজ জহুর সেতু দিয়ে প্রতিদিন চোরাকারবারীরা কোটি কোটি টাকার ভারতীয় অবৈধ চিনি নিয়ে আসছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিশোরগঞ্জ বড়বাজারের কয়েজন ব্যবসায়ী জানান, এই অবৈধ সিন্ডিকেট চক্রের সাথে আঁতাত করে বড় বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী গত রমজান মাসেই ভারতীয় অবৈধ চিনি বাজারজাত করে কোটি কোটি টাকা মুনাফা করেছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সামনে আসছে ঈদুল আযহা। চোরাই সিন্ডিকেট ও ব্যবসায়ীরা আরো মরিয়া হয়ে উঠছে।
তারা আরো জানান, স্থানীয় বড়বাজারের পুলিশ ফাঁড়ির কর্তৃপক্ষকে ভারতীয় অবৈধ চিনি জন্য ট্রাক প্রতি ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা দিতে হয়। এরপর রাস্তায় চেক পোষ্টসহ বিভিন্ন স্থানে গুণতে হয় টাকা।
বিশ্বস্ত সূত্রে আরও জানা যায়, চোরাই সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে ভারতীয় অবৈধ চিনির ট্রাক মোটা পলিথিন কাগজ দিয়ে মোড়ানো থাকে। অসাধু চোরাকারবারীরা এর সাথে বিভিন্ন মাদক নিয়ে আসে। যা আমাদের দেশ ও জাতীর জন্য ভয়ংকর।
কিশোরগঞ্জ ক্যাব এর সভাপতি আলম সারোয়ার টিটু জানান, তিনিও দীর্ঘদিন ধরে এসব অবৈধ ভারতীয় চিনির ট্রাক দেখতে পান। প্রতিবাদও করেছেন কয়েকবার। কিন্ত কে শুনে কার কথা। সিন্ডিকেট চক্রটি শক্তিশালী। তাছাড়া স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও প্রভাবশালী বলে চোরাকারবারীরা বহাল তরীয়তে ব্যবসা করছেন।