শতাব্দী ডেস্ক : খুনে ব্যাটিংয়ে সুর বেঁধে দিলেন ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেড। পরের ব্যাটসম্যানরাও রাখলেন দারুণ অবদান। তাতে ইনিংসে কোনো ফিফটি ছাড়াই এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম দল হিসেবে দুইশ রানের পুঁজি গড়ল অস্ট্রেলিয়া। পরে অ্যাডাম জ্যাম্পা, প্যাট কামিন্সদের চমৎকার বোলিংয়ে লক্ষ্যের ধারেকাছেও যেতে পারল না ইংল্যান্ড। বারবাডোসে শনিবার ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার জয় ৩৬ রানে।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০১ রানের পুঁজি গড়ে ইংলিশদের ১৬৫ রানে থামিয়ে দেয় তারা। টি-টোয়েন্টিতে পাঁচ ম্যাচ পর চির প্রতিদ্ব›দ্বীদের বিপক্ষে জয়ের স্বাদ পেল অস্ট্রেলিয়া; সবশেষ দুই ম্যাচ অবশ্য হয়েছিল পরিত্যক্ত। আসরে প্রথম দুই ম্যাচেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল ২০২১ আসরের চ্যাম্পিয়নরা।
আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংলিশরা দুই ম্যাচেই রইল জয়শূন্য, স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের লড়াইটি ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। অস্ট্রেলিয়ার এই জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতে নেন জ্যাম্পা। রান তাড়ায় দারুণ শুরু করা ইংলিশ দুই ওপেনার জস বাটলার ও ফিল সল্টকে ফিরিয়ে এই লেগ স্পিনারই ঘুরিয়ে দেন ম্যাচের মোড়। দুটি শিকার ধরেন দলে ফেরা কামিন্সও।
দুই দলের ইনিংসেই নেই কোনো ফিফটি। ম্যাচটিতে মোট রান হয়েছে ৩৬৬, কোনো ব্যক্তিগত ফিফটি ছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এক ম্যাচে যা সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড। আগেরটি ছিল ২০১০ আসরে দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউ জিল্যান্ডের ৩২৭। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়াকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন হেড ও ওয়ার্নার।
দ্বিতীয় ওভারে উইল জ্যাকসকে টানা দুই ছক্কা মারেন হেড, ওয়ার্নার মারেন একটি। মার্ক উডের ওভারে তিন ছক্কার সঙ্গে একটি চার মারেন ওয়ার্নার। ৩০ বলে ৭০ রানের উদ্বোধনী জুটির পর পরপর দুই ওভারে বিদায় নেন তারা। মইন আলির বলে বোল্ড হন ১৬ বলে ৩৯ রান করা ওয়ার্নার। জফ্রা আর্চার ভেঙে দেন ১৮ বলে ৩৪ রান করা হেডের স্টাম্প। পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেটে ৭৪ রান করে দলটি। মিচেল মার্শ ও গেøন ম্যাক্সওয়েলের ব্যাটে আরেকটি পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটি পায় অস্ট্রেলিয়া। ২৫ বলে ৩৫ রান করা মার্শের বিদায়ে ভাঙে ৬৫ রানের যুগল।
পরের ওভারেই বিদায় নেন ম্যাক্সওয়েল। মার্কাস স্টয়নিসের ১৭ বলে ৩০ ও শেষ দিকে ম্যাথু ওয়েডের ১০ বলে ১৭ রানের ইনিংসে দুইশ পার করে অস্ট্রেলিয়া। লক্ষ্য তাড়ায় বাটলার ও সল্টের ব্যাটে ইংল্যান্ডের শুরুটাও হয় দারুণ। পাওয়ার প্লেতে তারা তোলে ৫৪ রান। সপ্তম ওভারের প্রথম বলে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান সল্ট। বল মুঠোয় জমালেও পা বাউন্ডারি লাইনে লেগে যায় হেডের, উল্টো হয় ছক্কা।
ওই ওভারে মিচেল স্টার্ককে আরেকটি ছক্কা ও চার মারেন বাটলার। আক্রমণে এসেই ৩৭ রান করা সল্টকে বোল্ড করে ইংল্যান্ডের ৭৩ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন জ্যাম্পা। এই লেগ স্পিনারের পরের ওভারে রিভার্স সুইপ করে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ধরা পড়েন বাটলার। ২ ছক্কা ও ৫ চারে ২৮ বলে ৪৮ রান করেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক।
উইল জ্যাকস ও জনি বেয়ারস্টো দ্রুত বিদায় নিলে চাপে পড়ে ইংলিশরা। সেই চাপ কিছুটা কমানোর চেষ্টা করেন মইন। ম্যাক্সওয়েলের অফ স্পিনে মারেন তিন ছক্কা। কিন্তু তাকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি ওমানের বিপক্ষে না খেলা কামিন্স। হ্যারি ব্র্যাক, লিয়াম লিভিংস্টোনরা পারেননি দলকে কাক্সিক্ষত ঠিকানায় পৌঁছে দিতে। গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়ার পরের ম্যাচ নামিবিয়ার বিপক্ষে, ইংল্যান্ডের পরের প্রতিপক্ষ ওমান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া : ২০১/৭ (২০), হেড ৩৪, ওয়ার্নার ৩৯, মার্শ ৩৫, ম্যাক্সওয়েল ২৮, স্টয়নিস ৩০, ডেভিড ১১, ওয়েড ১৬, কামিন্স ০, স্টার্ক ১; মইন ২-০-১৮-১, জ্যাকস ১-০-২২-০, আর্চার ৪-০-২৮-১, উড ৩-০-৩২-০, রাদিশ ৪-০-৪১-১, জর্ডান ৪-০-৪৪-২, লিভিংস্টোন ২-০-১৫-১।
ইংল্যান্ড : ১৬৫/৬(২০), সল্ট ৩৭, বাটলার ৪২, জ্যাকস ১০, বেয়ারস্টো ৭, মইন ২৫, ব্রæক ২০, লিভিংস্টোন ১৫, জর্ডান ১; স্টার্ক ৩-০-৩৭-০, হেইজেলউড ৪-০-২৮-১, কামিন্স ৪-০-২৩-২, স্টয়নিস ৩-০-২৪-১, জ্যাম্পা ৪-০-২৮-২, ম্যাক্সওয়েল ২-০-২২-০।
ফল : অস্ট্রেলিয়া ৩৬ রানে জয়ী। ম্যান অব দা ম্যাচ: অ্যাডাম জ্যাম্পা।