তাড়াইল প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার তালজাঙ্গা ইউনিয়নের শাহবাগ পাঁচপাড়া গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন ও নাজমিন দম্পতির দুই মাস বয়সী চুরি হওয়া শিশু জুনাইদ প্রায় ১৪ ঘন্টা পর সদর উপজেলার নীলগঞ্জের বেত্রাটী গ্রাম থেকে উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
এ সময়ে দু’জন অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- জেলার সদর উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের বেত্রাটী গ্রামের মৃত শহীদ উদ্দীনের ছেলে রুবেল মিয়া (৩২) ও তারই শাশুড়ী তাড়াইল উপজেলার তালজাঙ্গা ইউনিয়নের শাহবাগ পাঁচপাড়া গ্রামের হারুন মিয়ার স্ত্রী সস্ত বেগম (৫৫)।
সন্ধ্যার দিকে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ তার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, রবিবার রাত পৌনে ২টা থেকে ৪টার মধ্যে শিশুটি চুরি হয়। তিনি জানান, অনুসন্ধানের সময় তিন থেকে চারটি বিষয়কে ক্লু করে আমরা অগ্রসর হই। হত্যাকাণ্ড, ট্রান্সজেন্ডার, চুরি।
কিন্তু চুরিটা কে বা কারা করতে পারে মর্মে দুই শ্রেণির লোকদেরকে টার্গেট করে অগ্রসর হই। যার অনেকগুলো মেয়ে সন্তান রয়েছে, শুধুমাত্র ছেলে সন্তানের জন্য ভীষণ রকমের প্রত্যাশি। আশেপাশেই এ রকম খোঁজা শুরু করি। এরইমধ্যে একটি ক্লপেয়ে সে অনুযায়ী কাজ শুরু করে পুলিশ।
ক্লু অনুযায়ী পুলিশ জানতে পারে জনৈক রুবেল-খাদিজা দম্পতির তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। চতুর্থ সন্তানও কন্যা এটা তারা নিশ্চিত হয়েছেন। এ বিষয়ট যাচাই করার জন্য রবিবার যে হাসপাতালে খাদিজা কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছে, সেই হাসপাতালে অভিযান চালায় পুলিশ।
সেখানে গিয়ে রুবেল-খাদিজা দম্পতির একটি কন্যা ও একটি পুত্র সন্তান হয়েছে জানা যায়। দম্পতির দাবি অনুযায়ী এটি তাদের চতুর্থ কন্যা সন্তান এবং অন্যটি তাদের একমাত্র পুত্র সন্তান।
কিন্তু রবিবার যে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়েছে বলে তারা দাবি করছেন, তার বাহ্যিক অবয়ব ও লক্ষণে সেটা একদিন আগের বলে মনে হয়নি। ফলে সন্দেহ ঘনিভূত হয়। পারিপার্শ্বিক স্বাক্ষীদের মাধ্যমেও বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করা হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে পুলিশকে তথ্য প্রদান করে। পরে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, পুত্র সন্তানটি প্রকৃত অর্থেই রুবেল-খাদিজা দম্পতির সন্তান নয়। বরং এটি সাজ্জাদ-নাজমিন দম্পতির চুরি হওয়া সন্তান জুনাইদ।
আটক রুবেল ও তার শাশুড়ি শিশুটিকে চুরির কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন বলে জানান পুলিশ সুপার। পর পর চারটি কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়া এবং পুত্র সন্তানের আকাঙ্খায় তারা এ কাজটি করেছে বলে ধারণা পুলিশের। এ বিষয়ে তাদেরকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
এ ব্যাপারে ভিকটিমের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগের পর আটক রুবেল ও তার শাশুড়ি সস্তকে এ মামলায় সম্পৃক্ত বিবেচনা করে মামলা রেকর্ড করা হবে বলে জানিয়েছেন।