শতাবদী ডেস্ক : প্রথম ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হার ছিল অপ্রত্যাশিত। বিশ্বকাপ ইতিহাসেরই সবচেয়ে বড় অঘটনগুলোর একটি। ওই হার যতটা অস্বাভাবিক, ততটাই স্বাভাবিক ভারতের কাছে পাকিস্তানের হার। বিশ্বকাপে তো সবচেয়ে নিয়মিত ঘটনাগুলোর একটি চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী দলের কাছে পাকিস্তানের পরাজয়।
এবারের পরাজয় তবু একটু অন্যরকম বলা যায়। মাত্র ১২০ রানের লক্ষ্যও পার হতে পারেনি বাবর আজমের দল! ম্যাচ শেষে সেই হতাশাই মিশে থাকল পাকিস্তান অধিনায়কের চোখেমুখে। তবে নিজেদের আশার সমাপ্তি এখনই দেখছেন না তিনি। শেষ দুই ম্যাচে জিতে এখনও পরের রাউন্ডে চোখ রাখছেন বাবর। নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে রোববার ভারতকে ১১৯ রানে আটকে রেখেও পাকিস্তান হেরে যায় ৬ রানে।
টস জিতে বোলিংয়ে নামা পাকিস্তানের বোলাররা দুর্দান্ত পারফর্ম করেন ইনিংসের শেষ আট ওভারে। ১১ ওভার শেষে ভারতের রান ছিল ৩ উইকেটে ৮৯। সেখান থেকে ৩০ রানেই তারা হারায় শেষ ৭ উইকেট। কিন্তু বোলারদের সেই পারফরম্যান্সকে যোগ্য প্রতিদান দিতে পারেননি পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা।
ম্যাচ শেষে অধিনায়ক বাবর বললেন, পাওয়ার প্লে তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজে লাগাতে পারেননি। “আমাদের ভাবনা ছিল, আমরা স্বাভাবিকই খেলব। ব্যাটিংয়ে প্রথম ছয় ওভার কাজে লাগাব। এসব পারলেই আমরা জিততাম। তবে এক উইকেট পড়ার পর প্রথম ছয় ওভারে আমরা যথেষ্ট ভালো ছিলাম না। আমাদের লক্ষ্য ছিল পাওয়ার প্লেতে ৪০ থেকে ৪৫ রান নেওয়া। কিন্তু আমরা তা কাজে লাগাতে পারিনি যথাযথভাবে এবং ১০ ওভারের পর আমরা একই ভুল করে গেছি।”
পাওয়ার প্লেতে বাবরের উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান তোলে ৩৫ রান। এরপর সপ্তম থেকে ষোড়শ, এই ১০ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে তারা করতে পারে কেবল ৫০ রান। এই সময়টায় ২৯ বল থেকে কোনো রানই করতে পারেনি তারা। বাবরের মতে, এখানেই জয়টা দূরে সরে গেছে তাদের কাছ থেকে। শেষ দিকে তা আর পুষিয়ে দিতে পারেননি তারা। “১০ ওভারের পর আমরা ভালো বোলিং করেছি।
১২০ রানের লক্ষ্যকে আমাদের সাদরেই গ্রহণ করা উচিত ছিল। প্রথম ১০ ওভারে আমরা বলপ্রতি রান তুলেছি। কিন্তু এরপর দুর্ভাগ্যজনকভাবে পিঠেপিঠি উইকেট হারিয়েছি এবং এরপর অনেক বেশি ডট বল খেলেছি।” “আমাদের পরিকল্পনা ছিল সাধারণ, স্বাভাবিকভাবে খেলা, প্রান্ত বদলানো এবং ওভারে একটি বাউন্ডারি মারলে এরপর স্বাভাবিক খেলে যাওয়াৃ ওভারপ্রতি পাঁচ-ছয় রান তোলা।
তবে ওই সময়ে আমরা অনেক বেশি ডটবল খেলেছি, এত আমাদের ওপর অনেক চাপ চলে আসে। পিঠেপিঠি দুই-তিন উইকেট হারানোও আমাদের জন্য কাল হয়েছে।” নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক মাঠের উইকেট নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে তুমুল। দুই চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচের উইকেটও একই আলোচনার খোরাক জুগিয়েছে।
তবে উইকেটকে কাঠগড়ায় তুলছেন না বাবর। “পিচ খারাপ ছিল না। বল বেশ ভালোভাবে ব্যাটে এসেছে। একটু ধীরগতির ছিল, কিছু বল একটু বেশি লাফিয়েছে। তবে ড্রপ-ইন পিচে এটুকু হয়েই থাকে। একটি-দুটি বল এরকম হবেই।” দুই ম্যাচ শেষে পাকিস্তানের ভাÐার এখন শূন্য। গ্রুপ পর্ব উতরানো এখন তাদের জন্য ভীষণ কঠিন। শুধু নিজেরা বাকি দুই ম্যাচ জিতলেই হবে না, তাকিয়ে থাকতে হবে অন্যান্যের দিকেও।
তবে সেই আশার তরী এখনও বাইছেন বাবর। “অবশ্যই শেষ দুটি ম্যাচ জিততে হবে আমাদের। আমরা বসে আলোচনা করব আমাদের ভুলগুলি নিয়ে। তবে পরের দুটি ম্যাচে তাকিয়ে আছি আমরা।” পাকিস্তান পরের দুটি ম্যাচ খেলবে কানাডা ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। সুপার এইটে ওঠার পথে তাদের মূল প্রতিদ্ব›দ্বী যুক্তরাষ্ট্র পরের দুটি ম্যাচ খেলবে ভারত ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে।