শতাব্দী ডেস্ক : ইউক্রেনের দূরপাল্লার ড্রোন হামলায় রাশিয়ার চারটি তেল শোধনাগার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ভোরে চালানো এই হামলায় তেল শোধনাগার, রাডার স্টেশন ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী এই দাবি করেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর তথ্য অনুসারে, গতকাল শুক্রবার ভোরে ইউক্রেনের ড্রোন রাশিয়ার আফিপস্কি, ইলস্কি, ক্রাসনোদার এবং আস্ট্রাখান তেল শোধনাগারে হামলা চালিয়েছে।
এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী বলেছে, আফিপস্কি, ইলস্কি, ক্রাসনোদার এবং আস্ট্রাখান তেল শোধনাগারগুলোতে হামলা করেছে ড্রোনগুলো। রাশিয়ার সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা কৃষ্ণ সাগর ও দখলকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের আকাশে ৭০টি ড্রোন, ক্রাসনোদার অঞ্চলের ওপর ৪৩টি ড্রোন এবং ভলগোগ্রাদ অঞ্চলের ওপর আরও একটি ড্রোন ভ‚পাতিত করেছে। রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলা ইউক্রেনীয় একটি গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, আফিপস্কি, ইলস্কি ও ক্রাসনোদার তেল শোধনাগার রাশিয়ার কৃষ্ণ সাগরীয় নৌবহরের জন্য জ্বালানি উৎপাদন করে।
এ ড্রোন হামলা গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউয়ের সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালিত হয়েছে। সূত্রটি আরও জানায়, এই শোধনাগারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রাশিয়ার তেল সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হবে। সরবরাহকে আরও ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ করে তুলবে। কারণ এখন অপর শোধনাগার থেকে তেল আনতে হবে রুশ বাহিনীকে। ইউক্রেনীয় বাহিনী জানিয়েছে, তারা ব্রায়ানস্ক অঞ্চল এবং দখলকৃত ক্রিমিয়ায় রাডার স্টেশন এবং ইলেকট্রনিক গোয়েন্দা কেন্দ্রেও আক্রমণ করেছে। যদিও তারা সঠিক স্থান উল্লেখ করেনি।
ক্রাসনোদার অঞ্চলে ড্রোন স্টোরেজ এবং উৎক্ষেপণ কেন্দ্র, কমান্ড এবং নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রেও আঘাত করা হয়েছে। তারা বলেছে, এই হামলায় বিস্ফোরণ ও আগুনের ঘটনা নিশ্চিত হওয়া গেছে। সূত্রটি বলেছে, এই ড্রোন হামলাটি ক্রাসনোদার অঞ্চলের ইয়েস্ক শহরে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছিল। রাশিয়া কেন্দ্রটি ইউক্রেনে ড্রোন আক্রমণের জন্য ব্যবহার করছিল।
বৃহস্পতিবার রাশিয়ার তামবভ এবং আদিগেয়া অঞ্চলের জ¦ালানি ডিপোতে ড্রোন হামলা চালানোর কথাও স্বীকার করেছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী। গতকাল শুক্রবার রাশিয়াও ইউক্রেনীয় ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে একাধিক ড্রোন ও বিমান হামলা চালিয়েছে। এর ফলে কিছু অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
শীতকালে গ্রিড সক্রিয় রাখা নিয়েও কিয়েভে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ইউক্রেনের বিদ্যুৎ গ্রিডে মার্চ মাস থেকে হামলা করে আসছে রাশিয়া। এসব হামলায় ইউক্রেনের জ¦ালানি উৎপাদন ক্ষমতায় উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করেছে। মস্কো বলেছে, রুশ ভ‚খÐে ইউক্রেনীয় হামলার প্রতিশোধ হিসেবে এসব আঘাত করা হচ্ছে।