প্রতিনিধি হোসেনপুর : হোসেনপুর পৌরবাসীর চোর আতংকে ঘুম হারাম। গত রবিবার (২৩ জুন) রাতে এক প্রবাসীর বাসার তালা কেটে দুর্ধর্ষ চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পিছনে পৌর এলাকার ৫নং ওয়ার্ডের প্রফেসার ফেরদৌস আলমের বাসায় ভাড়া থাকেন। প্রবাসী হানিফ মিয়া দুবাই থাকেন।
তার স্ত্রী আশা আক্তার জানান, ঈদ উল-আযহার ছুটিতে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান তিনি। বাড়ি থেকে একই ইউনিটের আরেক ভাড়াটিয়ার মুঠোফোনের মাধ্যমে জানতে পারেন তাদের বাসায় চুরি হয়েছে। এমন খবর পেয়ে গতকাল সকালে ছুটে আসেন। পরে এ ঘটনা পুলিশকে জানানো হলে হোসেনপুর থানার এসআই সুশান্ত সরকার চুরির ঘটনায় পরিদর্শনে আসেন।
তিনি জানান, বাসায় সিসি ক্যামেরাকে ফাঁকি দিতে চোরেরা একতলা বাসার পিছন দিকের আম গাছ বেয়ে বাসার ছাদে উঠেন। ছাদের দরজা খোলে কেচি গেইটের ভিতরে থাকা এ প্রবাসীর বাসার তালা কেটে ভিতরে ঢুকে তছনছ করে। এ বাসার পাশের ইউনিট এর লোকজন যাতে বাসা থেকে বের হতে না পারেন, সেজন্য তাদের বাসার সিটকারী বাহির দিয়ে আটকে দেয়। গতকাল সকালে ভিতরের লোকজন ঘুম থেকে ঊঠে দরজা খোলার চেষ্টা করে দরজা কুলতে না পেরে আশপাশের লোকজনের সাহায্যে নিয়ে বের হয়ে পাশের বাসার তালা কাটা দেখতে পান। পরে বুঝতে পারেন চোরেরা রাতে এমন কান্ড করেছেন।
এমন ঘটনায় পৌরবাসীদের মধ্যে চোর আতংক আরো বেড়ে গেছে। পৌরসভার একাধিক বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়- ঈদের ছুটিতে অথবা অন্য কোন কারণে বাসা-বাড়ি তালাবদ্ধ করে কোথাও বেড়ানোর উদ্দেশ্যে গেলে চুরি হওয়ার ঘটনা এখন অহরহ ঘটছে। বিগত (১৩ মে) ২ ঘন্টার ব্যবধানে দিন-দুপুরেই ৩ স্থানে চুরি হয়েছে। চোর আতঙ্কে দুশ্চিন্তায় রয়েছে বিশেষ করে প্রবাসী, ব্যবসায়ী ও চাকুরিজীবীগণ। তাদের বাসা-বাড়িকে চোরেরা টার্গেট করে সেগুলোতে চুরি করে বেড়ায়। চোরেরা চুরি করে নগদ টাকা, স্বার্ণালংকার নিয়ে গেলে ভুক্তভোগীরা পুলিশকে জানালেও কোন প্রতিকার পায় না।
এ বিষয়ে অনেকেই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেও কোন প্রতিকার না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। প্রতিকার না পাওয়ায় অনেকেই এখন আর থানা পুলিশের কাছে যেতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। যে জন্য চুরির পরিমাণ এখন দিন দিন বেড়েই চলছে। চুরি হওয়ার শিকার অনেকের সাথে কথা বললে তারা পুলিশের ভূমিকাকে দায়ী করেন। গত কয়েকদিনে চুরি হওয়া ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছে পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের সৌদি প্রবাসি ফয়জুল ইসলামের এক বাসা থেকেই ৩ বার চুরি হওয়ার ঘটনা।
যার পাশেই এক বাসার পরই ভাড়া বাসায় বসবাস করেন হোসেনপুর থানার ওসি তদন্ত মোহাম্মদ টুটুল উদ্দিন। প্রবাসী ফয়জুল ইসলামের স্ত্রী জানান, তার বাসা থেকে এর আগে জানালা খোলে বেনেটি ব্যাগে রক্ষিত মেয়ের স্বর্ণের গয়না নিয়ে যায়। এর পর আবারো গত (১৩ মে) সকাল ৯টায় তারই ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়ার বাসার তালা কেটে নগদ ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ও এক ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়, ওই দিন একই সময়ে উপজেলা পরিষদের পিছনের জীবন মিয়া ও আকরাম হোসেনের বাসা থেকে একই কায়দায় তালা কেটে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি হয়।
এছাড়াও আরো কয়েকটি চুরি হওয়ার তথ্য রয়েছে। যেগুলোর অভিযোগ থানায় দেওয়া হলেও কোন প্রতিকার বা চুরির রহস্য উদঘাটন হয়নি।
হোসেনপুর থানার ওসি তদন্ত মোহাম্মদ টুটুল উদ্দিন জানান, আমরা এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই চুরির ঘটনাগুলো উদঘাটনে সক্ষম হবো।