প্রতিনিধি, অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) : কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রাম ও মিঠামইনে অবাধে বোয়াল মাছের পোনাসহ বিভিন্ন দেশী প্রজাতির পোনা ও মা মাছ নিধন করা হচ্ছে। হাওরে প্রতিদিন চলছে বাইন, বেলে, চিংড়ী, টেংরা, টাকি, শোল, গজার, পাবদা, কৈ, শিং, পুটি, খলসে ও টাটকিনি মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ ও মাছের পোনা ধরার এ মহোৎসব। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ পোনা ধরে অষ্টগ্রাম ও মিঠামইন উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন হাট বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। বিশেষ করে বাজারে বোয়ালের পোনার ব্যাপক আমদানি দেখে সাধারণ মানুষ বিরূপ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করলেও মৎস্য বিভাগের টনক নড়ছে না।
গত কয়েকদিন উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায় প্রায় প্রতিটি বাজারেই অসাধু মাছ ব্যবসায়ীরা বোয়ালের পোনাসহ দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছের পোনা ও মা মাছ বিক্রি করছেন। বিক্রেতারা জানায়, স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি বোয়াল মাছের পোনা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। অথচ কয়েক মাস পর বোয়ালের এ পোনার ওজন হবে এক থেকে দেড় কেজি। তখন প্রতিটি বোয়াল মাছ বিক্রি হবে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।
সূত্র জানায়, উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, ভীম জাল ও চায়না দুয়ারী জাল। আর এসব অবৈধ জাল দিয়েই দেশীয় প্রজাতির মাছের পোনা ও মা মাছ নিধনে মেতে উঠেছেন স্থানীয় জেলেরা। এতে দেশি প্রজাতির মাছ বিপন্ন হওয়ার পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়েছে হাওরের জীববৈচিত্র।
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ-আল-মামুন এ প্রতিনিধিকে জানান, নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল, ভীম জাল ও চায়না দুয়ারী জাল ব্যবহারের কারণে দেশীয় প্রজাতির মাছ আজ হুমকীর সম্মুখীন।
ঈদের আগেও অভিযান পরিচালনা করে ৬৭টি ভীম জাল পুরিয়েছি। মাছের পোনা ও মা মাছ নিধন বন্ধ করার কোন পরিকল্পনা আছে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য আমরা মাইকিং করেছি, মৎসজীবি সমিতি, মসজিদের ইমাম ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেছি। শীঘ্রই বাজার মনিটরিং করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলশাদ জাহান মুঠোফোনে এ প্রতিনিধিকে জানান, ইতিপূর্বে আমরা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে বিভিন্ন প্রকার অবৈধ জাল জব্দ করে পুরিয়েছি। তিনি বলেন, দ্রæত বাজার মনিটরিং করে মাছের পোনা ও মা মাছ নিধনকারীদের বিরদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।