স্টাফ রিপোর্টার : নিকলী ও মিঠামইন উপজেলার সীমানায় ঘোড়াউত্রা ও ধনু নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে নদীর তীরবর্তী গ্রাম, ফসলী জমি। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে জরুরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছরের পর বছর স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ও প্রশাসনের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় নানাভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর শতাধিক কৃষকের স্বাক্ষর সহ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলার ১ হাজার ৪৭০ বর্গ কিলোমিটার হাওর রয়েছে।
যা জেলার মোট আয়তনের অর্ধেকের বেশি। এর মধ্যে রয়েছে কালনী, কুশিয়ারা, ধনু, ঝিনুক, ঘোড়াউত্রা, মেঘনা সহ ছোট বড় ১৫টি নদী। উপজেলার শিংপুর ইউনিয়নের গোড়াদিঘা গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা রতন মিয়া, সবুজ মিয়া, হারিছ মিয়া, মতি মিয়াও কতুজ আলীর সাথে কথা বলে জানা গেছে সারা বছরই নিকলীও মিঠামইনের সীমানার ধনু নদী থেকে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হয়।
এতে করে নিকলী উপজেলার শিংপুর গোড়াদিঘা হাওর পাড়ের গ্রাম ও ফসলী জমি ভাঙ্গন দেখা দেয়। নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে কৃষি জমি ও বসতভিটা। নদী ভাঙ্গনে অনেকই ঘর বাড়ি হারিয়ে দেশের বিভিন্ন শহরে ভাসমান অবস্থায় বসবাস করছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে বাঁধা দিলে নানান নির্যাতনের স্বীকার হন। ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারণে নদীর তীর ভেঙ্গে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে অনেকের বাড়ি ঘর ভেঙ্গে গেছে। গত শনিবার সরজমিনে ধনু নদী গিয়ে দেখা গেছে, দুটি ড্রেজার মেশিন নদীতে বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে ছবি তুলতে গেলে তারা নানানভাবে হুমকি দেয়।
এসকল বালু ট্রলী দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হচ্ছে গোড়াদিঘা গ্রামের পাশে ধনু নদীতে ফসলী জমিও বিদ্যুৎ এর খুঁটি হুমকির মুখে রয়েছে। উত্তোলন করা বালু শ্রমিকরা বিক্রির জন্য বুলগেডে তুলে দিচ্ছে। এসময় ড্রেজারের কয়েকজন শ্রমিককে বালু উত্তালনের অনুমোদন রয়েছে কিনা জানতে চাইলে কোনো উত্তর দিতে পারেনি। তারা বলেন, আমরা দৈনিক হাজিরায় কাজ করি আমরা এসব বলতে পারবো না।
তবে মাঝে মাঝে ছোট নৌকা লইয়া ড্রেজারের মালিকের কাছ থেকে কারা যেনো টাকা লইয়া যায়। নিকলী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া বলেন, তিনি লিখিত অভিযোগটি পেয়েছেন বলে জানান। প্রত্যন্ত হাওরের দূর্গম এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রতিকূলতার সুযোগ নিয়ে প্রশাসনের সাথে লুকোচুরি খেলায় মেতে উঠেন বালু উত্তোলন কারিরা।
তবে বালু উত্তোলনকারিরা যতই প্রভাবশালী হোক তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে একই কায়দায় মেঘনা ও কালনী থেকে সরকারি বালু দাবি করে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে। এব্যাপারে অষ্টগ্রাম উপজেলার আবদুল্লাহ পুরের চেয়ারম্যান আনোয়ার খাঁ অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করেছেন।