প্রতিনিধি তাড়াইল : তাড়াইলে সবজির লাগামহীন দামে দিশেহারা হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত, খেটে-খাওয়া মানুষরা চরম বিপাকে পড়েছেন। ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরের নীচে গ্রামীণ বাজারগুলোতে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। মাঠ পর্যায় প্রশাসনের নজরদারির অভাবে পাইকারি এবং খুচরা পর্যায়ে বিক্রেতারা চড়া দামে সবজি বিক্রি করায় এই লাগামহীনতা আরো চরমে পৌছেছে। স্থানীয় পাইকাররা বলছেন, বন্যা আর দফায় দফায় বৃষ্টির কারণে সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাই বাজারে সবজির আমদানি কমে যাওয়ায় চড়া দামেই কিনছেন ক্রেতারা।
উপজেলার সদর বাজারের সবজি ব্যবসায়ী হুমায়‚ন জানান, চলতি মৌসুমে সবজি চাষীরা বৃষ্টির কারণে আশানরুপ সবজি চাষ করতে পারেনি। তাই বাজারে আমদানি কম হওয়ায় পাইকারী কেনা দরের চেয়ে সামান্য কিছু লাভ হাতে রেখে আমি সবজি বেচা-কেনা করছি। লাগামহীন ভাবে প্রতি দিনই সবজির দর বৃদ্ধি পাওয়ায় খুচরা পর্যায়ে বেচাকেনা করতে গিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে মনোমালিন্যসহ বাকবিতন্ডার মতো ঘটনা ঘটছে।
কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা দাম বাড়ল সবজির। কাঁচামরিচের কেজি মানভেদে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, করলার কেজি ১৮০ টাকা, কাঁকরোল ১৫০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, বরবটি ২০০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ১০০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, টমেটো মানভেদে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, বেগুন ১০০ টাকা, গাজর ১৫০ টাকা, পেপে ৬০ টাকা, মুহি ৯০ টাকা, পুরল ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
দেশি পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ছিলো ৯০ থেকে ১০০ টাকা, আলু ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম কমেছে মুরগির। এছাড়া মাছ, আদা, রসুনসহ অন্যান্য নিত্যপণ্য আগের বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল তাড়াইল উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
তাড়াইল সদর বাজারের সবজি বিক্রেতা মৃন্ময় বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে সবজির দাম উর্ধ্বমুখী। তবে টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সবজির দাম আরও বেড়ে গেছে। তাড়াইল সদর বাজারে বাজার করতে আসা শাহানা বেগম বলেন, বাজারে সবজির এত দাম দেখে নিজেই হতাশ হয়েছি। অন্য সব ধরনের পণ্যের দামই আকাশ ছোঁয়া। মানুষ কি খেয়ে বাঁচবে। দাম বেশি হওয়ায় সবজি কম কিনেছি। টমেটো কিনেছি হাফ কেজি।
ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা। কোথাও বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিলো ১৬৫ টাকা। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লারের কেজি ১৭০ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। বাজারে সোনালি মুরগি ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে যা গত সপ্তাহে ছিলো ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা।
বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে প্রায় সব ধরনের মাছের দাম উর্ধ্বমুখী। চাষের শিংয়ের কেজি (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকা, রুইয়ের দাম কেজি (আকারভেদে) ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাঙাশ ১৯০ থেকে ২২০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়, কাতল ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা ও কই ২২০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।