কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার চাতাল গ্রামের দশ বছর বয়সী শিশু জিদনী আক্তার। অভাবী কাঠুরিয়া শরীফ মিয়ার কন্যা শিশু জিদনী তার দূর সম্পর্কের ফুফুর বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতে গিয়েছিল ঢাকায়। গৃহকর্তা ফুফু ও তার পরিবারের লোকজন পিটিয়ে ও গরম পানির ছেঁকা দিয়ে জিদনীকে হত্যার করেছে বলে অভিযোগ বাবা’র।
শুক্রবার ভোর রাতে অ্যাম্বুলেন্স করে শিশু জিদনীর লাশ চাতল গ্রামে পৌঁছে দিয়ে দ্রæত সটকে পড়েন তারা। নিথর মরদেহটি তার গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছলে তার মা বাবা ও এলাকাবাসী হতভম্ব হয়ে যান। জিদনীর মৃতদেহে অসংখ্য আঘাত ও আগুনে ঝলসে যাওয়ার চিহ্ন দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
ঢাকার লালবাগ এলাকায় দূর সম্পর্কের এক ফুফুর বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করত সে। গতকাল (২৩ আগস্ট) ভোর রাতে সে লাশ হয়ে ফিরেছে নিজ বাড়িতে।
জিদনীর বাবা শরীফ মিয়া জানান, অভাবের সংসার তার। লেখাপড়া করাবেন ও ভালোভাবে মানুষ করবেন বলে মেয়ে জিদনীকে বছরখানেক আগে বাসায় কাজ করতে নিয়ে যান তার দূর সম্পর্কের বোন আছমা আক্তার।
আছমার স্বামী নূরুজ্জামান ঢাকার লালবাগে ব্যবসা করেন। জিদনীর কাজের বিনিময়ে তারা কোনো টাকা দিতনা। আছমার (ফুফু) মোবাইল ফোনে মাঝে মধ্যে কথা হয়েছে মেয়ের সাথে।
মেয়েকে দেখতে ঢাকায় যেতে চাইলে ঠিকানা দিতে গড়িমসি করতেন আছমা। শুক্রবার ভোর রাতে আমার মেয়ে জিদনীর লাশ বাড়িতে নিয়ে আসে। তারা জানান, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে জিদনী মারা গেছে। আছমার ছোট ভাই মুজাহিদসহ তিনজন অ্যাম্বুলেন্স করে লাশ নিয়ে আসেন। এসময় আমরা লাশের শরীরে আঘাত ও আগুনে পোড়ানোর ক্ষত চিহ্ন দেখতে পায়। এ বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাইলে দ্রæতঅ্যাম্বুলেন্স উঠে পালিয়ে যায় তারা।
শুক্রবার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সাব ইন্সপেক্টর মোহসীন জানান, প্রাথমিক অবস্থায় এটি একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে পরিলক্ষিত হচ্ছে। লাশের সুরতহালে দেখা যাচ্ছে শিশুটির সমস্ত শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ও গরম পানি দিয়ে চামড়া ঝলসানো হয়েছে।
কটিয়াদী মডেল থানার ওসি গোলাম সারোয়ার জানান, লাশের সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ডিএমপি লালবাগ থানাকে অবহিত করেছি।