প্রতিনিধি, ভৈরব : ভৈরবের মেঘনা নদীতে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিএডিসি’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ। গত রবিবার দিবগত রাত তিনটায় হঠাৎ করে বাগানবাড়ির নদীর পাড় এলাকার ১৬০ মিটার এলাকা ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে বিএডিসি’র দুটি সার গুদাম ও যমুনা অয়েল কোম্পানীর তেল ডিপো ভাঙনের হুমকির মুখে পড়ে। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে গুরুত্বপ‚র্ণ জ্বালানি তেল সরবরাহ যমুনা, মেঘনা ডিপোঘাট, সার গুডাউন, ২টি রেল সেতু ও গুরুত্বপ‚র্ণ স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন ।
এসব স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেলে দেশের ২৭টি জেলায় জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থা সিলেট ও চট্টগ্রামের সাথে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
খবর পেয়ে গতকাল সকালে ঢাকার কেন্দ্রীয় অঞ্চলের পানি উন্নয়র বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী (চীফ ইঞ্জিনিয়ার) মো. আসাদুজ্জামান, বিএডিসি’র প্রধান কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. রেদুয়ান আহমেদ রাফি, ভৈরব সেনা ক্যাম্পের মেজর সানজিদুল ইসলাম, বিএডিসি ভৈরব সার গুদামের সহকারী পরিচালক (সার) শিপন সাহা, যমুনা ডিপোর সহকারী ব্যবস্থাপক মো. মতিউর রহমান। এছাড়াও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ভাঙন এলাকাটি পরিদর্শন করেন।
ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত হলেও কাজ চলছে ধীরগতিতে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে ভাঙন এলাকা প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলতে প্রস্তুতি গ্রহণ ও ব্যবস্থা নিতে কিছু সময় লাগবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কেন্দ্রীয় অঞ্চল ঢাকার প্রধান প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান জানান, মেঘনা নদীর ঘ‚র্ণিপাক ও স্রোতধারার গতিবেগে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে ১৬০ মিটার এলাকা। তবে ভাঙনের গভীরতা ৫/৭ মিটার। ভাঙনরোধে আপাতত ২৫ হাজার জিও ব্যাগ লাগবে। গতকাল মঙ্গলবারের মধ্য দুই হাজার জিও ব্যাগ ভাঙন এলাকায় ফেলা হয়েছে। আগামী দুই তিনের মধ্য ২৫ হাজার জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শেষ করা যাবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, এখনকার কাজটি সাময়িক। ভবিষ্যতে শুষ্ক মৌসুমে স্থায়ীভাবে এখানে বাঁধ দিতে হবে।
এ বিষয়ে বিএডিসি’র প্রধান কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুজ্জামান জানান, ঘটনার খবর পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে আমি ভৈরবে এসে ভাঙন এলাকাটি পরিদর্শন করেছি। ভাঙনে আমাদের বিএডিসির দুটি সার গুদাম হুমকিতে পড়েছে। গুদাম দুটি ভাঙনে ক্ষতি হলে সারসহ শতকোটি টাকা ক্ষতি হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিয়েছে দেখলাম। প্রয়োজন হলে গুদামের মজুতকৃত সার কিছু পরিমান আমরা সরিয়ে নিব।
এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফুল আলম বলেন, ভাঙনের খবর পেয়ে আমি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগিরের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা যা করার প্রশাসনকে আমরা করব। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি পরিবারকে আমরা সহযোগিতা করেছি, আরও করব। বিষয়টি নিয়ে আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করব।