প্রতিনিধি, কটিয়াদী : বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত মাল্টার ফলন বেশি হওয়ায় চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকের। দেশের উঁচু অঞ্চল ও পাহাড়ি মাটি মাল্টা চাষের উপযুক্ত। এ কারণে ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফলটির চাষও বেড়েছে। তবে বেশি লাভের আশায় পরিপক্ক হওয়ার আগেই ফল বিক্রি করছেন কৃষক। একশ্রেণির ব্যবসায়ী গ্রাম থেকে অপরিপক্ক মাল্টা কিনে কটিয়াদীর হাটবাজার ও অলিগলিতে বিক্রি করছেন ।
ক্রেতারা বলছেন, অনেকটা পানসে ও হালকা টক জাতীয় মাল্টা কিনে তারা ঠকছেন। বাজারে সম্ভাবনাময় সুমিষ্ট এ ফলের প্রতি ক্রেতাদের এক ধরনের নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হচ্ছে। এতে ক্রেতা হারিয়ে ভবিষ্যতে এ ফল চাষে আগ্রহ হারাতে পারে কৃষক।
কটিয়াদী বাজারের জেলা পরিষদ মার্কেট এলাকা থেকে দুই কেজি মাল্টা কিনেছিলেন জালালপুরের ফারুক আহমেদ। বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খেয়ে দেখেন মিষ্টতা নেই। একেবারেই রস কম, পরিপক্ক হয়নি। তিনি বলেন, ‘এমন জানলে তো টাকা দিয়ে মাল্টা কিনতাম না।
দেশীয় ফলের প্রতি আমার আলাদা একটা ভালোবাসা রয়েছে। তাই একসঙ্গে দুই কেজি মাল্টা নিয়েছিলাম। এমন স্বাদহীন মাল্টা আমি আর কিনব না।’
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ‘পোস্ট হারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী বলেন, ফল পরিপক্ক ও মিষ্টি হওয়ার জন্য যে উপাদানটি মুখ্য ভূমিকা রাখে তা হচ্ছে ইথিলিন।
সাইট্রাস জাতীয় ফল পরিপক্ক হওয়ার আগে সংগ্রহ করলে, তার মিষ্টতা, স্বাদ ও রং হওয়ার জন্য যে পরিমাণ ইথিলিন থাকার কথা, তা থাকে না। আমাদের দেশে যে মাল্টা এখন বিক্রি হচ্ছে, তা পরিপক্ক হওয়ার আগেই গাছ থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। ফলে এর প্রকৃত স্বাদ, ঘ্রাণ ও মিষ্টতা পাচ্ছেন না ক্রেতারা। এ অবস্থা চলতে থাকলে ফলটি কিনতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন ক্রেতা।’