স্টাফ রিপোর্টার, পাকুন্দিয়া থেকে : পাকুন্দিয়া উপজেলায় লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় অতিষ্ট এলাকাবাসী। শহরের চেয়ে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে গ্রামাঞ্চলে। তীব্র গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং। বিদ্যুতের ঘন ঘন আসা-যাওয়ায় ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে মানুষকে।
পাকুন্দিয়া পৌরসভা এলাকায় দিনে ১০ থেকে ১২ বার লোডশেডিং হলেও উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি খুবই নাজুক। স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ লোডশেডিং কম হচ্ছে দাবি করলেও বাস্তবতা ভিন্ন। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে দিনে ১৮ থেকে ২০ ঘন্টা লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা পোহাতে হচ্ছে গ্রাহকদের।
কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অধীন পাকুন্দিয়া জোনাল অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় একটি পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়ন রয়েছে। এসব এলাকায় অন্তভুর্ক্ত বিদ্যুতায়িত গ্রাম ১৭৫টি। সঞ্চালন লাইন এক হাজার ২৫৮ কিলোমিটার। সংযোগপ্রাপ্ত ৭২ হাজার ৪৭২ জন গ্রাহকের সর্বোচ্চ চাহিদা ১৭ মেগাওয়াট। সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে তিন থেকে চার মেগাওয়াট।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দিনরাত সমানতালে লোডশেডিং হচ্ছে। তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ে বেশি বিপদে পড়েছে উপজেলার কয়েক হাজার বৃদ্ধ ও শিশুরা। ঘেমে জ¦র, কাশিসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। তাদের বিশ্রামের প্রয়োজন হলেও বিদ্যুৎ না থাকায় ঘরে থাকতে পারছেন না ।
পাকুন্দিয়া পৌর এলাকার বরাটিয়া গ্রামের মাসুদ রানা বলেন, আমাদের পৌর সদরে এক ঘন্টা লোডশেডিংয়ের পর এক ঘন্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। আবার এক ঘন্টা পর বিদ্যুৎ চলে যায়। এই নিয়মেই প্রতিদিন বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করে।
উপজেলার সালুয়াদী গ্রামের ওয়াজেদ নবী বলেন, কয়েক মাস ধরে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা লোডশেডিংয়ের পর ২০ থেকে ৩০ মিনিট করে বিদ্যুৎ পাচ্ছি আমরা। এই নিয়মে প্রতিদিনই বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করছে। ফলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রায় ২০ ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হচ্ছে আমাদের।
উপজেলার এগারসিন্দুর গ্রামের আলামিন বলেন, লোডশেডিংয়ে অতিষ্ট হয়ে ওঠেছে তাদের জনজীবন। সারাদিনে সর্বোচ্চ চার ঘন্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছি আমরা। বাকি ২০ ঘন্টা আমাদের থাকতে হয় বিদ্যুৎবিহীন।
এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. শহীদুল আলম বলেন, এ উপজেলায় ৭২ হাজার ৪৭২ জন গ্রাহক রয়েছেন। ছয়টি ফিডারের মাধ্যমে এসব গ্রাহকের মাঝে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এখানে গড়ে প্রতিদিন ১৭ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। তবে এর বিপরীতে মিলছে মাত্র তিন থেকে চার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। ফলে লোডশেডিং হচ্ছে।