মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৬ পূর্বাহ্ন

নগরকুলের রাস্তায় স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও ইট-পাথরের ছোঁয়া লাগেনি

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৪৬ Time View

প্রতিনিধি, তাড়াইল, রুহুল আমিন : দেশ স্বাধীনের পর পেরিয়ে গেছে যুগের পর যুগ। কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার দামিহা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের নগরকুল গ্রামে বেড়ে ওঠা মানুষগুলোও কাদা-মাটি মাখিয়ে চলতে চলতে বার্ধক্য কাটিয়ে অনেকেই এখন আর নেই। আবার কেউ বেঁচে আছেন কালের সাক্ষী হয়ে। কিন্তু অবকাঠামোগত উন্নয়নে ভাগ্য বদল হয়নি তাদের।

নগরকুল গ্রামের তিন কিলোমিটার সড়ক অর্থাৎ মঞ্জিল মিয়ার বাড়ির সামনে থেকে বটতলা পর্যন্ত এবং বাহার উদ্দিনের দোকানের সামনে থেকে নগরকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত দুটি রাস্তা স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও পাকা হয়নি। ফলে শত শত পরিবারের দুর্ভোগ অবর্ণনীয়। এই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ইট পাথরের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও ছোঁয়া লাগেনি এই গ্রামটিতে।

তিন কিলোমিটার রাস্তায় উন্নয়নের ছিটেফোঁটা না পড়ার পেছনে জনপ্রতিনিধিদের ব্যর্থতাকেই দায়ী করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। গ্রামটিতে রয়েছে সরকারি প্রাইমারি স্কুল, কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও মাদরাসা। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বর্ষার দিনে প্রতিনিয়ত কাদামাটি দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করে। বর্ষার মৌসুমে পা সিটকে পড়ে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে। এভাবেই প্রতিনিয়ত ছোট ছোট দুর্ঘটনার শিকার হন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এই কাদামাটি পেরিয়েই উচ্চশিক্ষা করতে যেতে হয় শহরে। আর এ কারণেই পিছিয়ে রয়েছেন নারী শিক্ষার্থীরা এমনও দাবি করেন অনেক নারী শিক্ষার্থী।

নগরকুল গ্রামের বাসিন্দা সুরুজ মিয়া, বাহার উদ্দিন, শাহজাহান মিয়া জানান, এই গ্রামের গ্রামীণ সড়কে আজও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। যার কারণে যুগ যুগ ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে স্থানীয় শত শত পরিবার। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলে রাস্তাটির অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ে। জনপ্রতিনিধিরা উন্নয়নের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে এলাকার মানুষের সাথে কেবল প্রতারণাই করে যাচ্ছেন দিনের পর দিন। তারা আরও জানান, বর্তমানে প্রতিটি ঘরে স্কুল কলেজ ও মাদরাসা পড়–য়া কয়েক শত ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। পাকা রাস্তা না থাকায় বৃষ্টি পড়লে সবচেয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হয় এসব শিক্ষার্থীদের।

স্থানীয় বাসিন্দা মামুন মিয়া, রোকতন, নিরঞ্জন ও উৎপল বিশ্বাস বলেন, নগরকুল গ্রামের মঞ্জিল মিয়ার বাড়ির সামনে থেকে বটতলা পর্যন্ত এবং বাহার উদ্দিনের দোকানের সামনে থেকে নগরকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তাটি শুষ্ক মৌসুমে ব্যবহার করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটি কাদা হয়ে যায়। ফলে এই কাদামাটি দিয়ে এলাকাবাসীদের চলাচল করতে হচ্ছে। তারা আক্ষেপের সুরে আরও বলেন, আমাদের গ্রামের কোনো পরিবর্তন দেখি না, মরার আগে পাকা রাস্তা দেখে যেতে পারবো কিনা সেটাও মনে হয় সম্ভব না। সব জায়গায় উন্নয়ন হয় আমাদের এলাকার উন্নয়ন হয় না।

উপজেলার দামিহা ইউনিয়নের নগরকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খন্দকার তাসলিমা বলেন, আমাদের দুঃখ-কষ্ট, দুর্ভোগের কথা কেউ শুনে না। আমাদের ভোগান্তির কথা বলে বোঝানো যাবে না, নিজ চোখে দেখতে হবে। আমাদের ছেলেমেয়েরা কষ্ট করে স্কুলে আসা-যাওয়া করে। এভাবে কতকাল কষ্ট করতে হবে কে জানে।

এই প্রসঙ্গে দামিহা ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কাশেম মানুষের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, রাস্তাটি পাকা করা খুবই জরুরি। রাস্তাটি পাকা করার জন্য গ্রামের মানুষ বিভিন্ন দপ্তরের শরণাপন্ন হয়েছে। খুব শীঘ্রই একটা সুফল পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তাড়াইল উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম বলেন, এ রাস্তা এখনো প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হয়নি, তবে প্রক্রিয়াধীন আছে।

আপডেট সংবাদ পেতে শতাব্দীর কন্ঠ পড়ুন, শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
All rights reserved © Shatabdir Kantha . Developed by SDTT Academy & Tech Liberty