প্রতিনিধি, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) এম এ কুদ্দুছ : কটিয়াদীতে প্রায় ৪০০ বছর ধরে জমছে দুর্গাপূজার ঢাকিদের হাট। পূজার কয়েকদিন আগে থেকেই মুন্সীগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় দুইশ ঢাকি আর বাঁশিওয়ালা আসেন এ হাটে। তাদের অস্থায়ী আবাসনের জন্য একটি অতিথিশালা নির্মাণকাজ সাত বছর আগে শুরু হলেও এখনও সম্পন্ন হয়নি। ফলে প্রতিবছরই পূজা মৌসুমে ভোগান্তি পোহাতে হয় ঢাকি ও বাঁশিওয়ালাদের।
প্রতিবছরই দুর্গাপূজার কয়েকদিন আগে উপজেলা সদরের পুরাতন বাজারে মন্দির আর উন্মুক্ত চতুরে জড়ো হন ঢাকি ও বাঁশিওয়ালারা। সেখানে প্রতিযোগিতা করে নেচে নেচে ঢাক আর বাশি বাজাতে থাকেন। লক্ষ্য একটাই, বিভিন্ন পূজামন্ডপের কর্তা ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। এখান থেকেই বিভিন্ন পূজামন্ডপের জন্য ঢাকি ভাড়া নেওয়া হয়।
বহু যুগ ধরে কটিয়াটিতে আসছেন এসব ঢাকি-বাঁশিওয়ালা। দীর্ঘদিনেও তাদের জন্য স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। বিষয়টি নিয়ে কয়েক বছর ধরে স্থানীয় সমাজপতিরা চেষ্টা করে আসছিলেন। ঢাকিদের অবস্থানের জন্য একটি ভবন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ভবনের বারান্দায় মানুষ আড্ডা দিয়েছ।
এবার দুর্গাপূজা উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকি বিনয় দাস, গৌরাঙ্গ চন্দ্র দাসসহ অনেকেই কটিয়াদীতে এসেছেন। তারা থাকছেন স্থানীয় বিভিন্ন মন্দির আর হোটেলে। এজন্য তাদের বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। ঢাকি ও বাঁশিওয়ালাদের অনেকে দীর্ঘদিন ধরে এ হাটে আসছেন। এতদিনেও তাদের অতিথিশালার নির্মাণ না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন।
ঢাকের হাটের সমন্বয়কের দায়িত্বে রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা তপন কুমার ঘোষ। তিনি জানান, হাটে যেসব মÐপের কর্মকর্তারা ঢাকি ভাড়া করতে আসেন, তাদের কাছ থেকে কিছু অনুদান রাখা হয়। তারা ৩০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত অনুদান দিয়ে থাকেন। এই তহবিল থেকে বাইরের ঢাকিদের থাকা, খাওয়া, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ব্যয় নির্বাহ করা হয়।
ঢাকিদের অতিথিশালা নির্মাণের জন্য সনাতন সম্প্রদায়ের স্থানীয় নেতা দীলিপ কুমার ঘোষের নেতৃত্বে একটি কমিটি রয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি জানান, অতিথিশালা নির্মাণের জন্য সাবেক এমপি সোহরাব উদ্দিন ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলেন। এই অর্থে ভবনের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা যায়নি।