স্টাফ রিপোর্টার : দীর্ঘ ১৬ বছর পরে প্রকাশ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে দিনব্যাপী কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার আমির অধ্যাপক মো. রমজান আলীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও ময়মনসিংহ অঞ্চল পরিচালক ড. সামিউল হক ফারুকী।
সম্মেলনে কোরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা ইদ্রিছ আলী। সম্মেলন উদ্বোধন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ সিফাত উল্লাহর বাবা হাফেজ নূরুজ্জামান। বক্তব্য রাখেন জেলা নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আজিজুল হক, সাবেক আমির অধ্যক্ষ মাওলানা তৈয়বুজামান, অধ্যাপক আব্দুস সালাম, জেলা সেক্রেটারি মাওলানা নাজমুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি শামসুল আলম সেলিম, কাজী সাইফুল্লাহ, এডভোকেট শেখ রোকন রেজা প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কোন চোর, ডাকাত, ব্যবসায়ী, দুর্নীতিবাজ আর পার্লামেন্টে ঢোকার মতো কোনো সুযোগ পাবে না। জামায়াত সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি ফর্মুলা জাতির সামনে উপস্থাপন করেছে। সেই ফর্মুলা আপাত দৃষ্টিতে অনেকে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, পৃথিবীর ৯১টি দেশে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালু রয়েছে। এই পদ্ধতিতে জনগণ দলের মার্কাকে ভোট দিবে, কোন ব্যক্তিকে ভোট দিবে না। যে যতো পার্সেন্ট ভোট পাবে সে ততো আসন পাবে পার্লামেন্টে। আর পার্লামেন্টে কারা জনপ্রতিনিধি হয়ে যাবে সেটা ঠিক করে দিবে দল। বর্তমান সিস্টেমে এক আসনে ভোটার হলো তিন লাখ। এই তিন লাখ ভোটের মাধ্যমে যিনি এক লাখ একান্ন হাজার ভোট পাবেন তিনি বিজয়ী হবেন।
বর্তমান পদ্ধতিতে কালো টাকার মালিক যিনি, যিনি সবচাইতে বেশি সন্ত্রাসী, যার দাপট বেশি, মাস্তানি বেশি, তাকেই দল সেখানে মনোনয়ন দেয় যাতে কেন্দ্র দখল করে এক লাখ একান্ন হাজার ভোট পেয়ে পাশ করতে পারে।
এই সিস্টেম বাংলাদেশের মাটিতে বন্ধ করার জন্য সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির প্রস্তাব বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দিয়েছে। যখন দলগুলো তাদের ইশতেহার জনগণের সামনে তুলে ধরবে জনগণ যে দলকে পছন্দ করবে সেই দলকেই ভোট দিবে। কারো ভোট মাইর যাবে না। এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে সবাই পার্লামেন্টে যেতে পারবে পার্সেন্টিজ অনুসারে।
দীর্ঘ ১৬ বছর পর প্রকাশ্যে এ রুকন সম্মেলন কেন্দ্র করে শহরের বিভিন্ন এলাকায় তোরণ নির্মাণ করে কিশোরগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামী। আর এই সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
এই সম্মেলনের মাধ্যমে রুকনদের সরাসরি ভোটের মধ্যমে কিশোরগঞ্জ জেলার নতুন আমির নির্বাচিত হবে।
জেলার ১৩টি উপজেলার পুরুষ এবং মহিলা রুকনগণ এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। উক্ত সম্মেলনে দেশাত্মবোধক ও ইসলামী সংগীত পরিবেশন করে কিশোরগঞ্জ কালচারাল সোসাইটির শিল্পীবৃন্দ। সম্মেলন অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন মাওলানা নাজমুল ইসলাম।