মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৪ পূর্বাহ্ন

কটিয়াদীতে কৃষি বিভাগের নতুন জাতের ধান রোপণে কপাল পুড়লো কৃষকের

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৪৩ Time View

প্রতিনিধি, কটিয়াদী, ফজলুল হক জোয়ারদার আলমগীর : কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে ব্রি ১০৩ ধানের বীজ রোপণ করে কয়েক শতাধিক কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ধানের শীষ গজানোর ফলে ধানে চিটা ধরাসহ ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, রোপা আমান ধান রোপনের জন্য বীজ সংগ্রহ করার সময় কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় বীজ ব্যবসায়ীরা নতুন জাতের ব্রি ১০৩ ধান রোপণ করার পরামর্শ দেন। কৃষকদের বলা হয়, অল্প দিনে ও অন্যান্য ধানের চেয়ে ফলন বেশি হবে।

তাদের পরামর্শে ইমরান সিডস্ ব্রি-১০৩ ধানের বীজ রোপণ করে প্রতারিত হয়েছে কয়েকশত কৃষক। এসব এলাকার মাঠে রোপণ করা ধান গাছে সময়ের আগেই ধানের শীষ গজিয়েছে। এর ফলে আগেই পরিপক্ক হয়ে যাওয়ায় ধান গাছ চিটে হয়ে মরে যাচ্ছে।

সেচ খরচ, কীটনাশক খরচ, জমিতে নিয়োগ করা শ্রমিক খরচ বাবদ বিঘা প্রতি ধানের জমিতে খরচ হয়েছে ১০-১২ হাজার টাকা। এতো টাকা খরচ করেও কাক্সিক্ষত ফলন না পাওয়ার দুশ্চিন্তায় ভুগছেন কৃষকরা।

কৃষি বিভাগ জানায়, নতুন জাতের ধানের মাঝে ১০৩ ধানের পরামর্শ দিয়েছিলাম। তবে যারা বিভিন্ন কোম্পানির ব্রি ১০৩ ধান রোপণ করেছে তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে। যারা বিএডিসির বীজ রোপণ করেছে তাদের ফলন অনেক ভালো হয়েছে।

মসুয়া ইউনিয়নের পং মসুয়া গ্রামের কৃষক মো. ইব্রাহিম জানান, ইমরান সিডস ব্রি-১০৩ জাতের ধানের চারা রোপণ করে প্রতারণার শিকার হয়েছি। ধানের শীষ বের হওয়ার পর দেখা যায় অধিকাংশ শীষ চিটা হয়ে মরে যাচ্ছে। এতে আমরা ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছি।

কৃষক মনির হোসেন জানান, আমার জমির ধান দিয়ে পরিবারের তিন বেলা খাবার জোটে। এবার ভেজাল বীজ লাগানোর ফলে ধানে চিটা হয়েছে। এখন চিন্তা করছি পরিবার নিয়ে খাব কী?

আচমিতা ইউনিয়নের অগ্রেরকোনা গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান, ভিটাদিয়া গ্রামের আবুল কাসেম, রজব আলী, মো. হাসিম ও জয়নাল আবেদীন জানান আমরা উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে ব্রি ১০৩ জাতের নতুন ধান রোপণ করি। বীজ রোপণের পর নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ধানের শীষ গজানোর ফলে ধানে চিটা বের হওয়া শুরু করে।

এ বিষয়ে কৃষি অফিস দফায় দফায় বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করার পরামর্শ দেয়। আশায় বুক বেঁধে দফায় দফায় বাজার থেকে ওষুধ কিনে প্রয়োগ করেও শেষ পর্যন্ত কোন ভাল ফল না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ি।

আচমিতা ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফারহানা ইয়াছিন জানান, আমাদেরকে উপজেলা কৃষি অফিসার ব্রি ১০৩ ধান রোপণ করার জন্য কৃষকদেরকে পরামর্শ দেওয়ার কথা বলেন। স্যারের কথা মত কৃষকদেরকে পরামর্শ দিয়েছি।

ব্রি ১০৩ জাতের ধান কেন এমন হল তা জানা নেই আমার। তবে আমার ধারণা বীজবাহিত রোগ অথবা আবহাওয়াজনিত কারণে এই অবস্থা হতে পারে। মাঠ পর্যায়ে কৃষকের অবস্থা উপজেলা কৃষি অফিসারকে জানিয়েছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া জানান, ব্রি ১০৩ ধানসহ অন্যান্য নতুন জাতের ধান রোপণ করার জন্য কৃষকদেরকে পরামর্শ দিয়েছি। কৃষকরা বিভিন্ন কোম্পানির ধান রোপণ করায় ফসলের বিপর্যয় হয়েছে বলে মনে করি। আমরা মাঠ পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ করছি। বীজবাহিত কারণে ফসলের ক্ষতি হলে আমরা বীজ কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

আপডেট সংবাদ পেতে শতাব্দীর কন্ঠ পড়ুন, শেয়ার করে সাথে থাকুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
All rights reserved © Shatabdir Kantha . Developed by SDTT Academy & Tech Liberty