হোসেনপুর প্রতিনিধি :
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংর্ঘষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল রবিবার সকাল ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত দু’ঘন্টা ব্যাপি সংর্ঘষ চলে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা ব্যর্থ হলে কিশোরগঞ্জ সেনা ক্যাম্প থেকে লেফটেনেন্ট রুম্মান এর নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ সময় সেনাবাহিনীর টিম দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেন। পৌর এলাকার দোকানপাটে হামলা চালায় উভয় পক্ষের লোকজন। হামলার সময় পৌর এলাকার ব্যবসায়ি, পথচারি ও শিক্ষার্থীরা ইট-পাটকেলের শিকারে পরিণত হয়ে আঘাত প্রাপ্ত হন।
জানা যায়, গত ৭ নভেস্বর তারিখে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা হোসেনপুর সরকারি মডেল পাইলট স্কুলের ভোকেশনাল শাখার দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তাহসান হোসেন পূণ্যকে (১৫) বিদ্যালয়ে ঢুকে কুপিয়ে জখম করে।
এতে আঞ্চলিকতায় বিভক্তির সৃষ্টি হয়। সেই থেকে পৌর এলাকার দ্বিপেশ্বর ও সিদলা এলাকার চর বিশ্বনাথপুর এ দু’ অংশের মধ্যে বিভক্তির সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রায়ই পৌর এলাকায় ঊভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সৃষ্টি হয়।
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এক সময়ে রণ ক্ষেত্রে রুপ নেয় ফলে ওই সময়ে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র রাম দাসহ বিভিন্ন অস্ত্রের সাথে ইট পাটকেল নিয়ে সংর্ঘষে লিপ্ত হয়। গতকাল দু’ঘন্টা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়।
এ সময় চর বিশ্বনাথে পুরের লোকজন হোসেনপুর বাজারে কফিল মিয়ার কাপড়ের দোকান খাজা বস্ত্রালয়, হাইস্কুল মার্কেটের শফিক স্টোর, মাইরা ফ্যাশন, খান টেলিকম, জিল্লুর রহমানের খামারের দোকানসহ বেশ কয়েকটি দোকানের শার্টারে কুপিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
এছাড়াও চর বিশ্বনাথপুর গ্রামবাসীর হামলায় এ সময পাঁচ জনকে কুপিয়ে জখম করা হলে হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসার জন্য ভর্তি রয়েছেন। তারা হলেন; ঢেকিয়া গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে জীবন মিয়া(২২), একই গ্রামের হোসেন মিয়ার ছেলে ইমন মিয়া(২২),আশরাফ মিয়ার ছেলে দিদার (১৭), পৌর এলাকার দ্বিপেশ্বর গ্রামের সবুজ মিয়ার ছেলে পূণ্য (১০), সাহেদল ইউনিয়নের কুড়িমারা গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মোবারক হোসেন।
হোসেনপুর পৌর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করায় মোড়ে মোড়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী অবস্থান নিয়ে পাহাড়ায় নিয়োজিত থাকায় পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হোসেনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ হোসেন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কী করণীয় সে বিষয়ে মিটিং চলছে বলে এ বিষয়ে পরে জানানো হবে বলে ফোন রেখে দেন।
হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাহিদ ইভা জানান, এ রির্পোট লিখার সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে সেনাবাহিনীর কিশোরগঞ্জ ক্যাম্প প্রতিনিধি, হোসেনপুর পুলিশ প্রশাসন ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সাথে পরামর্শ করে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তা পরে জানাবেন বলে নিশ্চিত করেন।