প্রতিনিধি ভৈরব, জামাল আহমেদ : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আয়োজনে ভারতের আগরতলা অভিমুখী লংমার্চের যাত্রাপথে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে পথসভার আয়োজন করা হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরবের নিউটাউন মোড় এলাকায় কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে এ পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পথসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী।
লংমার্চের পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী তার বক্তব্যে বলেন, ভারত আমাদের পাশ্ববর্তী একটি রাষ্ট্র। তারা নিজেদেরকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে দাবি করে থাকেন। কিন্তু বাংলাদেশের ছাত্র জনতা গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে একটি ফ্যাসিবাদ সরকারকে বিতাড়িত করেছে। তথাকথিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী পালিয়ে গিয়ে ভারত আশ্রয় নিয়েছেন।
আমরা মনে করি, ভারত একটি সন্ত্রাসের আশ্রয়স্থলের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। আমরা ভারত সরকারের কাছে বলতে চাই, আপনার কৃতদাস শেখ হাসিনা তো আপনার কাছেই রয়েছে। মনে রাখবেন, এই বাংলাদেশ শেখ হাসিনার বাংলাদেশ নয়, এই বাংলাদেশ শহীদ জিয়ার বাংলাদেশ, এই বাংলাদেশ খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ, এই বাংলাদেশ তারেক রহমানের বাংলাদেশ।
আমরা শহীদ জিয়ার জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করি। তাই আমরা হুশিয়ার উচ্চারণ করে বলতে চায়, বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটির দিকে তাকালে সেই চোখ আমরা জাতীয়তাবাদী শক্তি উপড়ে তুলে ফেলবো। আমরা চাই, ভারতের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। আমরা ভারতকে সুস্বাদু ইলিশ মাছ দিয়েছি, আর প্রতিদানে বঞ্চনাস্বরূপ আমাদের যুবসমাজ ধ্বংসের জন্য ইয়াবা-ফেনসিডিল দিয়েছো, বাঁধ ছেড়ে দিয়ে আমাদের দেশকে তলিয়ে দিয়েছো। অতএব তোমরা বাংলাদেশের ভালো বন্ধু হতে পারো না।
এসময় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরসহ কেন্দ্রীয় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সিনিয়র নেতাকর্মী ও কিশোরগঞ্জ জেলা ও ভৈরব উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল ৯টায় রাজধানীর নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে লংমার্চ শুরু হয়। লংমার্চ শুরুর আগে নয়াপল্টনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গাড়িবহর ঢাকা থেকে বের হওয়ার পর সড়কের দুই পাশে নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়। তারা হাত নেড়ে, ফুল ছিটিয়ে গাড়িবহরকে স্বাগত জানান।
এদিকে বেলা দেড়টায় ভৈরব থেকে আগরতলা মুখী লংমার্চ যাত্রা শুরু করেন। এসময় কেন্দ্রীয় বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম লংমার্চের অংশ নেয়া গাড়ি বহরে থাকা নেতাকর্মীদের স্বাগত জানান।
এসময় সাথে ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি হাজী মোঃ শাহীন সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমানসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ‘দিল্লি না ঢাকা/ঢাকা ঢাকা’, ‘ভারতের দালালেরা/হুঁশিয়ার সাবধান’সহ নানান স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। এ সময় নেতাকর্মীদের হাতে ফেস্টুন, জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা দেখা যায়।
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা ভারতের মিডিয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চলমান তথ্যসন্ত্রাস এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ ও সা¤প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এই লংমার্চ কর্মস‚চি করছে বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, জাতীয়তাবাদী যুবদল ও জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল। ছাত্র, যুবক এবং স্বেচ্ছাসেবী জনতা এই লংমার্চে অংশগ্রহণ করেন।