স্টাফ রিপোর্টার : কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে শতবছরের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এতে করে বিপাকে পড়েছেন ছয়টি পরিবারের সদস্যরা। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ফজলুর রহমান। তিনি মৃত মুসলেহ উদ্দিনের ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে কটিয়াদী উপজেলার মুমুরদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ মুমুরদিয়া গ্রামে।
অভিযোগকারী দেলোয়ার হোসেন দিলীপ একই এলাকার মৃত যতীন্দ্র চন্দ্র রায়ের ছেলে। চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খুলে দেওয়ার জন্য স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করতে ব্যর্থ হয়ে গত ৯ ডিসেম্বর কটিয়াদী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এরপরও সমাধান না হওয়ায় গতকাল শনিবার সকালে কিশোরগঞ্জ শহরে একটি সাংবাদিক সংগঠনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রাস্তা খুলে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ ও বক্তব্যে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে দেলোয়ার হোসেন দিলীপ (৬২) ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৫৫ শতাংশ জায়গাতে একশত বছর আগে থেকেই তাদের বসবাস। বাড়ি থেকে বের হওয়ার চলাচলের সেই রাস্তা গত দুই মাস আগে বাঁশের খুঁটির বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী ফজলুর রহমান ও তার লোকজন।
এতে করে বিপাকে পড়েছে ছয়টি পরিবার। চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি দেলোয়ার হোসেনের একমাত্র আয়োর উৎস চায়ের দোকানের সামনে বাঁশের বেড়ার দিয়ে দোকান ঘরটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মানবেতর জীবন যাপন করছেন দেলোয়ার হোসেনসহ অসহায় এই পরিবারগুলো।
জানা যায়, দেলোয়ার হোসেন দিলীপের জায়গার সাথে কয়েকমাস আগে একটি পুকুর ও বসত ভিটা ক্রয় করেছেন প্রভাবশালী ফজলুর রহমান। পরে পুকুর ভরাট করে রাস্তার জায়গাসহ পুরো জমি নিজের বলে দাবি করে আসছেন তিনি। কিন্তু তা মানতে নারাজ দেলোয়ার। এরপর সামাজিকভাবে সমাধান করতে ব্যর্থ হয়।
প্রভাবশালী হওয়ায় দুই মাস আগে নিজের জমি দাবি করে রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে ফজলুর রহমান। রাস্তার পাশাপাশি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে একমাত্র আয়ের উৎস দোকানও। স্থানীয়দের জানালে মীমাংস করে ব্যর্থ হওয়ায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।
মুমুরদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য জাহাঙ্গীর ভূইয়া বলেন, আমার জানামতে রাস্তার জায়গাটি ব্যক্তি মালিকানা। রাস্তাটি এতোদিন দেলোয়ার হোসেন ও আশপাশের আরও কিছু পরিবার ব্যবহার করে আসছে। কিছুদিন আগে ফজলুর রহমান রাস্তার পাশে কিছু জায়গা ক্রয় করেন।
এরপর থেকে রাস্তার জায়গা নিজের বলে দাবি করে আসছেন। আমরা মীমাংসা করতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছি। ফজলুর রহমান শুধু রাস্তা বন্ধ করে দেয়নি, দেলোয়ার হোসেনের দোকানও বন্ধ করে দিয়েছে। এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। প্রশাসনের নিকট রাস্তাটি খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
অভিযুক্ত ফজলুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে বলেন, আমি কারও জায়গা দখল করে বেড়া দেইনি। আমার জায়গায় আমি বেড়া দিয়েছি। দোকানঘরও আমার জায়গায় রয়েছে। দেলোয়ারকে সড়ে যেতে বলেছি, কিন্তু যায়নি। তাই বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
কটিয়াদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আমার জানা নেই, আপনাদের মাধ্যমে জেনেছি। অভিযোগকারীর সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।