প্রতিনিধি কটিয়াদী, ফজলুল হক জোয়ারদার : কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাঈদুল ইসলাম একাই ৫৪টি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করছেন। কটিয়াদীতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) না থাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কটিয়াদী পৌরসভার দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি উপজেলার ৫০টি কলেজ, স্কুল ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি।
৫ আগস্ট সরকার পতনের পর উপজেলা চেয়ারম্যানদের অপসরণ করা হয়। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রশাসকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পৌর মেয়রকে অপসরণ করে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) পৌর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বভার দেওয়া হয়। বদলিজনিত কারণে ৫ ডিসেম্বর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌর প্রশাসক সাফফাত আরা সাঈদ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট তার দায়িত্ব ন্যাস্ত করেন। ফলে ওই দুইটি দপ্তরের দায়িত্বও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পালন করতে হচ্ছে।
অন্যদিকে সরকার পতনের পর উপজেলার সকল স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার দায়িত্বে থাকা সভাপতিকে অপসারণ করে উপজেলা নির্বাহীকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। উপজেলার ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব উপজেলা নির্বাহী অফিসার পালন করছেন।
লোকবল সংকটের কারণে যথা সময়ে সঠিক সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সমস্যা পোহাতে হচ্ছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে। এছাড়াও অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকাদের কষ্ট তখন বেড়ে যায় যখন সঠিক সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় বিলম্ব হয়ে থাকে। তবে অচিরেই এই সমস্যা সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ভূমি সেবা প্রত্যাশীদের ভাষ্যমতে, উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) না থাকায় সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয় সেবা নিতে আসা লোকজনকে। ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার একাই চারটি দপ্তরের দায়িত্বে থাকায় সঠিক সময়ে আমরা সেবা পাচ্ছি না। একদিকে সার্ভারের সমস্যা, অন্যদিকে এসে দেখি স্যার নাই। জমি নামজারি করতে ঘুরতে হচ্ছে।
জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা গ্রামের নূর আলম জানান, খারিজের আবেদন করে দিনের পর দিন ঘুরতেছি। খারিজ হচ্ছে না। ছেলে বিদেশে যাবে সব কিছু রেডি এখন খারিজ না থাকার কারণে জমি রেজিস্ট্রি দিতে পারছি না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাঈদুল ইসলাম জানান, নিয়মাতান্ত্রিক ভাবেই গুরুত্বপূর্ণ চারটি দপ্তরসহ ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পড়েছে আমার ওপর। প্রতিটি দপ্তরের দায়িত্বই সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার চেষ্টা করছি। যদিও আমার জন্য এটা অনেক বড় চাপ। তারপরও সরকারি বিধান পালন করতে হচ্ছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) যোগদান করলে তখন দায়িত্ব কিছুটা কমে যাবে।