কটিয়াদী প্রতিনিধি, ফজলুল হক জোয়ারদার :
কটিয়াদীতে পং মস‚য়া আদর্শ মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগের এনটিআরসিএর ভুয়া সুপারিশপত্র দেখিয়ে তিন জনের নিকট থেকে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ করেছেন মাদ্রাসার সুপার ও সভাপতির বিরুদ্ধে।
চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে এনটিআরএর কর্তৃক পং মস‚য়া আদর্শ মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগের জন্য কোন শিক্ষককে সুপারিশ করা হয়নি। মাদ্রাসার সুপার, সভাপতি ও উপজেলা মধ্যমিক শিক্ষা অফিসার টাকার বিনিময়ে এনটিআরসি এর ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে সুপারিশ দেখিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে এমপিওভুক্ত করেছেন। এলাকাবাসীর পক্ষে মো. রমজান আলী ও আব্দুল মান্নান উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, কটিয়াদী উপজেলার পং মস‚য়া আদর্শ মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় ২০২৩ সালের জানুয়ারী মাসে এনটিআরসিএ এর অবৈধ সনদ ও ভুয়া সুপারিশপত্র দেখিয়ে মাদ্রাসার সুপার মো. আনোয়ার হোসেন তৎকালীন সভাপতি হুমায়ুন কবির সোহাগ ম্যানেজিং কমিটির অন্য সদস্যদের ভুল বুঝিয়ে ০৩ জন শিক্ষককে অবৈধভাবে নিয়োগ দেন। শিক্ষকগণ হলেন সহকারী শিক্ষক বাংলা শিরিন আক্তার, সহকারী মৌলভী মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুকও ইবতেদায়ী মৌলভী সাইফুল ইসলাম। ভুয়া নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষকগণ মোটা অংকে ঘুষ দিয়ে এমপিওভুক্ত হন। মাদ্রাসার সুপার তার সুবিধার্থে ভুয়া শিক্ষকদের মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটিতে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব দেওযা হয়। এ নিয়ে মাদ্রাসার অন্য শিক্ষকদের মাঝে অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অভিযোগকারি মো. রমজান আলী জানান সুপার ও সভাপতির দাপটে কেউ কথা বলতে পারতো না মাদ্রাসায়। সুপার ও সভাপতি মিলে মাদ্রাসার নিয়োগ বাণিজ্য করেছে। মাদ্রাসায় পাঁচজন ভুয়া শিক্ষক আছে। অবৈধভাবে সুপারের মেয়ে ও মেয়ের জামাইকে মাদ্রাসায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অবৈধভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক শিরিন আক্তার, মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুক ও সাইফুল ইসলাম জানান, সুপার আমাদের সাথে প্রতারণা করে বৈধ নিয়োগ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এখন আমরা যাচাই করে দেখি আমাদের নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র ভুয়া। সরকারি কর্মকর্তাদেরকে টাকা দিয়ে আমাদের এমপিও ভুক্ত করেছেন। এই বিষয়ে আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলেছি।
পং মস‚য়া আদর্শ মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় সুপার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, মাদ্রাসার চাহিদা অনুয়ায়ী এনটিআরসিএ থেকে সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ভুয়া প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির তৎকালীন সভাপতি হুমায়ুন কবির সোহাগ জানান, তিন জন শিক্ষক নিয়োগের জন্য এনটিআরসিএ সুপারিশ পেয়েছি। মাদ্রাসার সুপার সুপারিশ প্রাপ্ত তিনজন শিক্ষকের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে সঠিক বলায় তাদের নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারা ভুয়া কি না তা সুপার বলতে পারবেন।
কটিয়াদী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল হোসেন জানান, আমি কটিয়াদী উপজেলায় যোগদানের প‚র্বে পং মস‚য়া আদর্শ মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগকৃত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ হয়েছে। নিয়োগে ভুয়া শিক্ষক প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাঈদুল ইসলাম জানান, পং মসূয়া আদর্শ মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় ভুয়া শিক্ষক নিয়োগ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। এই বিষয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরে তথ্য পাঠানো হয়েছে। অধিদপ্তর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।