স্টাফ রিপোর্টার : কিশোরগঞ্জের মহিনন্দে এক নারী ইউপি সদস্যের ওপর বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত হাড়কাটা জখম করেছে দুর্বত্তরা। এসময় সন্ত্রাসীরা নারী ইউপি সদস্য পারভীন আক্তারের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রড দিয়ে মারাত্মক জখম করে মাটিতে ফেলে রাখে।
সন্ত্রাসীদের কবল থেকে উদ্ধার করে প্রথমে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক হাসপাতালে নিলে অবস্থা বেগতিক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করেন। ইউপি সদস্য পারভীন আক্তার বর্তমানে হাড় কাটা জখম ও প্রায় ২৭টি সেলাই নিয়ে হাসপাতালের বেডে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে গত সোমবার রাতে সদর মডেল থানায় একটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এলাকাবাসি ও সুশীল সমাজের দাবি সন্ত্রাসী আউয়ালসহ সকল আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের। মামলা ও সরেজমিন সূত্রে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মহিনন্দ ইউনিয়নের শ্রী নগর কলাপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলামের সাথে মাছ মারাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু আউয়াল মিয়াদের সাথে বিরোধ শুরু হয়।
পৈত্রিক একান্নভুক্ত সম্পত্তি বাৎসরিক ভাগাভাগি করে চাষ করার কথা থাকলেও সন্ত্রাসী আউয়াল মিয়া অন্যায় প্রভাব খাটিয়ে একাই বছরের পর বছর চাষাবাদ করতে থাকে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নজরুল ইসলাম জানতে চাইলে তাকে এবং তার পরিবারকে একেবারে শুয়ে দেওয়ার হুমকী প্রদান করে মারতে আসে।
প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীদের ভয়ে নজরুল ইসলাম নিরবে সকল অনাচার সহ্য করে বসবাস করে আসছেন। ঘটনার দিন গত ২০ ডিসেম্বর, শুক্রবার সকালে সন্ত্রাসী আউয়াল মিয়ার বাবা সিরাজুল ইসলাম বিরোধপূর্ণ পুকুর থেকে মাছ মারতে গেলে নজরুল ইসলামের স্ত্রী বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মিট মীমাংসার লক্ষ্যে মাছ মারতে নিষেধ করেন।
এসময় কথাকাটাকাটির এক ফাঁকে সন্ত্রাসী আউয়াল মিয়া, মো. রফিকুল ইসলাম ও সিরাজুল ইসলাম দেশীয় অস্ত্রসহ পারভীন আক্তারের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালায়। সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনাস্থলে ইউপি সদস্য পারভীন আক্তার ও ছেলে ইমন মারাত্মক রক্তাক্ত হাড়কাটা জখমের শিকার হন। হামলায় পারভীন আক্তার মাটিতে পড়ে গেলে সন্ত্রাসী আউয়ালের হাতে থাকা রামদা, রফিকুলের হাতে থাকা রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে আঘাত করে মারাত্মক নীলাফোলা ও রক্তাক্ত জখম করে ফেলে রাখে।
এসময় সিরাজুল ইসলামের হাতে থাকা বাঁশ দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে অশ্রাব্য গালিগালাজ করে। গুরুতর আহত পারভীন আক্তারকে উদ্ধার করে প্রথমে সদর আধুনিক হাসপাতালে পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এদিকে ইমন (ছেলে) সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছে। বর্তমানে ইউপি সদস্য পারভীন আক্তার শরীরের মারাত্মক জখম ও হাতে ২৭টি সেলাই নিয়ে হাসপাতালের বেডে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। এব্যাপারে সদর মডেল থানায় একটি মামলা রেকর্ড হয়েছে।
সন্ত্রাসী আউয়ালের বিরুদ্ধে ভূমি দখল, চব্বিশের ছাত্র আন্দোলনের বিরোধীতাকারীর অভিযোগ রয়েছে। মামলার দাবী, এলাকাবাসি ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতারের জোর দাবি জানিয়েছেন। আসামি ধরার জোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তা।
এদিকে সন্ত্রাসীরা খালি বাড়িতে তালা ভেঙ্গে লুটপাট চালিয়ে একটি হাজারফুটি টিউবওয়েল ও ঘরের গ্রিল ভেঙ্গে নিয়ে গিয়েছে বলে জানান নজরুল ইসলাম। সন্ত্রাসীদের হুমকীর কারণে পারভীন আক্তারের পরিবার বাড়িতে যেতে না পেরে অন্যত্র বসবাস করে চলেছেন।