প্রতিনিধি তাড়াইল : কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলার উজান অঞ্চলের মাঠে মাঠে দুলছে কৃষকের রক্তপানি করা ক্লান্তিমাখা জীবনের স্বপ্ন সোনালি ধানের শীষ। উপজেলার খোলা মাঠে দিগন্তজুড়ে দুলছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন। আর কয়েকদিন পরেই ঘরে উঠবে পাকা ধান। এখন ধুধু চোখে নজর কাড়ছে বোরো ধানের ক্ষেত। মাঠের চারিদিকে সোনালি রংয়ের সমারোহ। গত বছরের চেয়ে এ বছর বোরো ধানে কৃষকের কাঙ্খিত স্বপ্নের এ ক্ষেতে আশাতীত ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও বিভিন্ন প্রকার দুরে্যাগ পোকা মাকড়ের উপদ্রপে একাধিকবার দিতে হয়েছে কীটনাশক, বেড়ে গেছে উৎপাদনের খরচ। কৃষকের রয়েছে বিভিন্ন অসহযোগিতার অভিযোগ ইউনিয়ন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
গতকাল সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের কৃষক পরিবারে বইছে পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধ। মাঠে মাঠে আনন্দে মাতুয়ারা সোনালি ধানের শীষ। পাকা ধানের শীষে সূর্য্যরে সোনালি রোদ যেন খেলায় মেতেছে। কৃষাণ-কৃষাণিদের মনে বইছে আনন্দ আর মুখভরা হাসি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১০ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আবাদ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ হেক্টর বেশি জমিতে। অর্থাৎ ১০ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে। এ মৌসুমে প্রতি হেক্টরে পাঁচ থেকে ছয় টন ফলন পাওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের কালনা গ্রামের কৃষক মুজিবুর রহমান বলেন, গত বছরের তুলনায় এবারে ধান ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের উপদ্রপ বেশি ছিল। এতে কীটনাশক দিতে হয়েছে চারবার। তারপরও আশানুরূপ ফলন ঘরে তোলা সম্ভব বলেও জানান তিনি। একই এলাকার কৃষক ফজলুর রহমান বলেন, বোরো ধানে এবার গত বছরের চেয়ে বিঘায় দুই হাজার টাকা বেশি খরচ হবে। এতে ধানের দাম ঠিকঠাক পেলে কোনো মতে খরচগুলো উঠে আসবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমন কুমার সাহা জানান, চলতি বোরো মৌসুমে কাঙ্খিত ফসল পেতে সঠিক সময়ে ভালমানের বীজ রোপন, সারের ব্যবহার, ধানের ক্ষেত পরিদর্শন করে পোকামাকড় দমনে কৃষকদের উদ্ধত করাসহ নানা ধরণের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এর ফলে কৃষকরা তাদের কাঙ্খিত ফসল অর্জন করতে পারবেন। এরি মধ্যে ৮ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আগামী ২০-২৫ দিনের মধ্যে ধান কাটা শেষ হবে বলেও জানান তিনি।