প্রতিনিধি হোসেনপুর : ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের নির্বাচন আগামী ৮ মে বুধবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনও রয়েছে। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা ততই তুঙ্গে ঊঠছে। ভোটের মাঠকে সরব রাখতে মাইকে কথার মালায় ছন্দে চলছে প্রার্থীদের জয়গান। তীব্র গরমের মাঝে যদিও অস্বস্তির কারণ হয় মাইকের শব্দ, তবু নির্বাচনকে সামনে রেখে এরকম প্রচারণা না হলে ভোটারদের ভোট দিতে উৎসাহ যোগাতে এ রকম প্রচারণা না হলে; ভোটের দিন ভোট কেন্দ্রে অনেকেই ভোট দিতে উৎসাহ হারিয়ে যেত। প্রার্থী ও প্রার্থীর সমর্থকগণ নির্বাচনকে একটি উৎসব মনে করে পাড়া মহল্লায় প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনী আচরণ বিধিতে অধিক লোকের অংশগ্রহণে জনসমাগমের বিধি নিষেধ থাকলেও তা অমান্য করে উঠান বৈঠকের নামে নিজের সমর্থন জানান দিতে প্রতিযোগিতা করে চলছে সভা সমাবেশ। জনসমাগমের মাধ্যমে একরকম প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে প্রার্থীগণ। এ জন্য আচরণ বিধি অমান্যের সাথে ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ।
উপজেলায় ৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌর এলাকায় মোট ভোটার রয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ১৬৭ ভোট। এর মধ্যে সিদলা ইউনিয়নে ৩১ হাজার তিন ভোট, জিনারীতে ২৩ হাজার ৬৪০ ভোট, গোবিন্দপুরে ৩৬ হাজার ৬৭৯ জন, শাহেদল ১৯ হাজার ৪৬৩ ভোট, পুমদিতে ২৪ হাজার ৭৩৮ ভোট, আড়াইবাড়িয়াতে ৯ হাজার ৪৫২ ভোট ও পৌর এলাকায় ২১ হাজার ১৯২ ভোট। যার বিপরীতে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন।
চেয়ারম্যান পদে বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহেল আনারস প্রতীকে এবারো নির্বাচন করছেন। তিনি প্রয়াত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ুব আলীর ছেলে। তার পৈতিক নিবাস উত্তরাঞ্চলে সিদলা ইউনিয়নে হলে বর্তমানে তিনি পৌর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের ধুলিহরের বাসিন্দা। এছাড়াও চেয়ারম্যান পদে মটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন শাহ মাহবুবুল হক। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাহেদল ইউনিয়নের ৪ বারের ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন, এম এ হালিম হেলিকপ্টার প্রতীক পেয়ে প্রথম নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সাবেক সভাপতি। তাঁর বাড়ি আড়াইবাড়িয়া ইউনিয়নের ধনকুড়া গ্রামে হলেও তিনি পৌর এলাকায় বসবাস করেন। কাপ পিরিচ নিয়ে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন আশরাফ হোসেন কবির বর্তমান উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তিনি পুমদি ইউনিয়নের বাসিন্দা। টেলিফোন প্রতীক পেয়ে চেয়ারম্যান পদে অংশ নেওয়া রৌশনারা রুনু তিনিও বর্তমান উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাঁর স্বামীর বাড়ি সিদলা ইউনিয়নে অবস্থিত ও বিএনপি ঘরোয়ানা বলে পরিচিত। বীরমুক্তিযোদ্ধা নাজমূল ইসলাম দোয়াত কলম নিয়ে লড়ছেন তিনি গোবিন্দপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও বিএনপি থেকে বহি:স্কৃত বিদ্রোহী প্রার্থী। ভোটের হিসেব ও আঞ্চলিকায় বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহেল অনেকাংশে এগিয়ে থাকলেও আওয়ামী লীগের পদধারী শাহ মাহবুবুল হক ও এমএ হালিম দলীয় সমর্থন পেতে কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। যে জন্য শেষ পর্যন্ত কে বিজয়ী হবেন; এর জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে ভোটের শেষ দিন পর্যন্ত।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল-আমিন অপু (টিউবওয়েল), শফি উদ্দিন বাচ্ছু (চশমা), আলমগীর কবির সোহাগ (টিয়া পাখি), নাঈম হাসান সৃজন (তালাচাবি)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে যারা রয়েছেন তারা হলেন- ছারিয়া পারভীন জেনি (কলস), সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সেলিনা সারোয়ার (হাঁস) ও হেপি আক্তার (ফুটবল)।